প্রেমিককে নিয়ে বৈদ্যুতিক শকে স্বামীকে হত্যা

প্রকাশিত: ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রেমিক মো. ইসমাইল (৩১) সহ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বামী ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুসকে (৫১) বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে হত্যা নিশ্চিত করে ডাকাতির নাটক সাজান ঘাতক স্ত্রী সুরমা আক্তার প্রকাশ বিবি আছিয়া (৪০)।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) বিজয়া সেন বেগমগঞ্জ থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান।

এর আগে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকপুর গ্রাম থেকে কুদ্দুসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে। মরদেহ উদ্ধারের সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী সুরমা আক্তারকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে প্রেমিক দুবাই প্রবাসী মো. ইসমাইলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন বলেন, পাঁচ বছর আগে নিহত ব্যাবসায়ী কুদ্দুসের বাড়ির বিল্ডিং করার সময় টাইলস মিস্ত্রি মো. ইসমাইলের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে সুরমা আক্তার। দুজনের এসম্পর্ক ৫-৬ বছর যাবত চলে আসছিল। ইসমাইল দীর্ঘদিন দুবাই থাকার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে দেশে এসে সেনবাগ উপজেলায় খালার বাড়িতে ওঠে। সুরমার প্ররোচনায় তার স্বামী কুদ্দুসকে হত্যার পর আবারও দুবাই চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে।

বিজয়া সেন আরও বলেন, বুধবার রাতে সুরমা আক্তার প্রেমিক ইসমাইলকে বাড়ির ছাদে লুকিয়ে রাখে। রাতে স্বামী কুদ্দুসকে ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত সরবত পান করিয়ে অচেতন করে ইসমাইলকে শয়ন কক্ষে ডেকে নেয়। পরে কদ্দুসের দুই পায়ে তার বেঁধে বিদ্যুতের সংযোগ লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং পরে প্রেমিককে বের করে দিয়ে বাসায় ডাকাতির নাটক সাজান স্ত্রী সুরমা আক্তার।

এদিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে স্ত্রী সুরমা আক্তারের অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিক ইসমাইলকে নিয়ে নিজের স্বামীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সুরমা। পরে তার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাসপোর্ট ও বিমান টিকেটসহ ঘাতক ইসমাইলকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ৫ মিনিটের ফ্লাইটে দুবাই চলে যাবার কথা ছিল।

নোয়াখালী আদালতের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, সুরমা আক্তার ও তার প্রেমিক ইসমাইল পরকীয়ার জেরে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ব্যবসায়ী কুদ্দুসকে হত্যার কথা ১৬৪ ধারায় বিচারকের কাছে স্বীকার করেছে। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব, বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Loading