নদীতে ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বিঝু, বিষু সাংগ্রাইং, বৈসু উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ১২, ২০২৪

বান্দরবান প্রতিনিধি,

বান্দরবানে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের সাঙ্গু নদীতে” মা” গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব বিঝু ও বিষু উৎসব শুরু হয়েছে।

আজ শুক্রবার(১২ এপ্রিল) সকালে সাঙ্গু নদীতে” মা” গঙ্গাকে এ ফুল নিবেদন করে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের হাজারো শিশু- নারী পুরুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু বম, লুসাই, পাংখোয়া তিনটি সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য সকল সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এই বৃহৎ সামাজিক উৎসব প্রতিবছর পালন করে থেকে।

চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ১২ এপ্রিল ফুল দিয়ে নদীতে পূজা, শেষে ঘরদোর ফুল দিয়ে সাজায়, ১৩ এপ্রিল ঘরে ঘরে বিভিন্ন খানাপিনার আয়োজন করা হয়, একেঅপরের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই যেতে হয়, যদিও বা আধুনিক কালে এখন অনেকে একেঅপরকে নিমন্ত্রণ করে থাকে। ১৪ এপ্রিল বয়োজ্যােষ্ঠদেরকে গোসল করিয়ে তরুন -যুবতীরা আর্শীবাদ প্রার্থর্ণা করে, ভালো উন্নত মানে খানাপিনার আয়োজন করে ঘনিষ্ট আত্মীয় স্বজন, এলাকার মুরুব্বী, বয়োজ্যােষ্ঠদেরকে ঘরে এনে খাওয়ানো হয়। বাড়ীতে ভিক্ষু-সংঘকে ফাং করে বাড়ির লোকজনের মঙ্গলের জন্য মঙ্গল সুত্র শ্রবণ করে।
হ্যাপী চাকমা বলেন, প্রতিবছর ১২ এপ্রিল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো, গতবছর ভালো ছিলাম,আগামী বছরও ভালো থাকার আর্শীবাদ প্রার্থণা করে জল বুদ্ধ ও মা গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করি সাঙ্গুনদীতে, সকলের মঙ্গল কামনা করি।

সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, নদীতে ফুল দিয়ে পূজা করা আমাদের ঐতিহ্য, প্রকিবছর ১২ এপ্রিল তিন পার্বত্য জেলায় ১১টি সম্প্রদায় উৎসব মুখর পরিবেশে বিষু উৎসব পালন করে থাকে। জল বুদ্ধকে, “মা ” গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করে নিজের, পরিবারের তথা সকলের মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদন করে।

এদিকে প্রতিটি ফোঁটা-ই হোক শান্তির দুত’ পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারায়’ এই স্লোগানে আগামী শনিবার থেকে চারদিন ব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে শুরু হচ্ছে জলকেলী উৎসব বা মাহা: সাংগ্রাই পোয়ে:। বুধবার স্থানীয় রেষ্টুরেন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মংমংসিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক উক্যসিং মারমা।

এবার বান্দরবানের সার্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বিঝু, বিষু, সাংগ্রাইং, বৈসু একটু ভিন্ন। গত ২ এপ্রিল ও ৩এপ্রিল রুমা ও থানচিতে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি অস্ত্রলুটের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাোড়াশি অভিযান চলছে পাহাড় জুড়ে। সেজন্য রুমা,থানচি ও রোয়াংছড়ি দুর্গম এলাকাগুলোতে আতংক বিরাজ করছে, বৈসাবি উৎসব আর তেমন উৎসব মূখর পরিবেশে উৎসব পালন হচ্ছে না।

উৎসবকে ঘিরে যেকোনো পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন।

 

Loading