গঠনমূলক রাজনীতি না করলে বিএনপি পালানোর পথ পাবে না

প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ণ , জুন ২২, ২০২৩

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি-জামাত সম্পূর্ণরূপে একটা জনবিচ্ছিন্ন এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল, যারা মানুষ হত্যা করতে সিদ্ধহস্ত।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কাজী বশির মিলনায়তন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

এসময় তিনি বলেন ১৯৭১ এ জামাত গণহত্যা চালিয়েছে বাঙালির উপর, ৭৫ এ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবারের উপর বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের হোতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। ৭৮ থেকে ৭৯ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড সমূহেরও হোতা জিয়াউর রহমান। নিকট অতীতে ২০০১ সালে জোট বেধে বিএনপি-জামাত আওয়ামী লীগ নিধনে নেমে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হত্যা করেছে। আর ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বিএনপি-জামাতের কুখ্যাত জঙ্গি-সন্ত্রাসী জোট সরকারের তা আপনাদের মনে থাকার কথা। সুতরাং, খুন, হত্যার রাজনীতির ক্ষেত্রে এদের উদ্দেশ্য এবং অভিলাস ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নাই। এরা শুধু হত্যা, ক্যু এবং সন্ত্রাসই করতে জানে, জনগণের জন্য কিছু করার মুরদ নাই।

তিনি আরও বলেন, “এখন ক্ষমতা দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে! আমি তাদেরকে বলবো, এখনো সময় আছে মানুষের পাশে দাঁড়ান, গঠনমূলক রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন, তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। আপনারা পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। আপনাদের এক শীর্ষ নেতাতো ইতোমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আর এক সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ নেত্রীও পালানোর পথ খুঁজছেন বিভিন্ন অজুহাতে। আপনাদের এই সকল নিম্নমানের রাজনীতি আজকের প্রজন্ম বুঝে। তাই এদেশের জনগণ আপনাদের সাথে নাই এবং একারণেই আপনারা এখন পর্যন্ত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি সারাদেশের যুবলীগের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাবো যে, এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে। নামে মাত্র দায়সারাভাবে গাছ লাগাবেন না, গাছের পরিচর্যাও প্রয়োজন। এমন জায়গায় লাগাবেন না যাতে মানুষের যাতায়াতের পথের মথ্যে পরে, যে পরের দিন মানুষজন গাছটা তুলে ফেলতে বাধ্য হয়। গাছ শুধু লাগালে হবে না, গাছ বাচাতেও হবে। গাছে যত্ন নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “শুধু গাছ লাগালে হবে না, গাছ যাতে টিকে থাকে সে জন্য যত্ন করতে হবে। সেই গাছ একদিন ফল দেবে, কাঠ দেবে বা ওষুধ দেবে; আপনারা নানাভাবে উপকৃত হবেন”। আমাদেরকেই আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এই দেশ আমাদের। আজকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ রঙে আঁকতে হবে। সুতরাং মনে রাখবেন, শুধু গাছ লাগালেই চলবে না, গাছের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য। গত ২ বছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা ১ কোটিরও বেশি বৃক্ষরোপণ করেছি। এবারও আমাদের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। গত ৫ জুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে “বিশ্ব পরিবেশ মালা-২০২৩ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান বৃক্ষমেলা-২০২৩ এর শুভ উদ্বোধন করেছেন। সুতরাং এটা শুধু একটা কর্মসূচি না, এটা বৃক্ষরোপণ অভিযান। এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ড-ইউনিয়ন-পৌরসভা-উপজেলা-জেলা ও মহানগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করবে। এখনি বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়: আষাঢ়-শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাস। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কারণ শুধু বৃক্ষরোপণ করলে চলবে না, বৃক্ষ পরিচর্যা করতে হবে সারা বছর। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিবেশ সুরক্ষায় যুবলীগ সর্বদা মাঠে থাকবে। আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বৃক্ষরোপণ, তথা উন্নত প্রাকৃতিক পরিবেশের কোন বিকল্প নাই। তিনি আরও বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে একটি সফল সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছে। যে আন্দোলনে ইতোমধ্যে সারা বাংলার যুবসাজ একত্মতা প্রকাশ করছে। সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় সারাদেশে ৫২,০০০ একর বনভূমি এবং উপকূল বরাবর ৪০,০০০ একর বনভূমি তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় ১৩,০০০ একর জমিতে নতুন বন তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ১৫,০০০ হাজার এক জমিতে নতুন বন তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের যুবসমাজ ঝাঁপিয়ে পড়েছে বঙ্গবন্ধু জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে; জনগণ একটা উন্নত পরিবেশ বান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে একত্রিত ও সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। এই দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৩ এর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মোঃ শেখ সাগর, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।

Loading