রামগড় চা বাগানে উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক বিশাল লেক

বাহার উদ্দিন বাহার উদ্দিন

রামগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১:২২ অপরাহ্ণ , মার্চ ১১, ২০২৩

রামগড় চা বাগানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বাগানের ভিতরের একটি বিশাল জলাশয়।দেড়যুগে দুই লক্ষ কেজি থেকে উৎপাদন বেড়ে প্রায় ১০ লক্ষ কেজিতে পৌঁছেছে। প্রকৃতির ভারসাম্যহীন আচরনে যথাসময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে বাগানের চা গাছগুলো খরায় পুড়ে মরে যাচ্ছিল। অনাবৃষ্টির কারণে প্রচন্ড খরায় ক্ষতিগ্রস্ত বাগানটিকে পুনঃজীবিত করতে জলাশয়টিকে ব্যাবহার উপযোগী করতে সংস্কার করে লেকে রুপান্তর করে কর্তৃপক্ষ। দিবারাত্রি লেক থেকে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়ে প্রাণ বাঁচানো হচ্ছে প্রায় ১৪ শ একর আয়তনের বাগানে প্রচন্ড খরায় মৃতপ্রায় চা গাছগুলো। শুধু তাই নয়, আগাম চায়ের কচি পাতা সংগ্রহও চলছে বাগানটিতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শুস্ক মৌসুমে খরার সময় লেক থেকে সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি উঠিয়ে ভূ র্গভস্থ স্থায়ী পাইপ লাইন দিয়ে খরায় মরার হাত থেকে রক্ষা করা হচ্ছে চা গাছগুলো। বিশালায়তনের লেক ও স্থায়ী সেচ ব্যবস্থা থাকার কারণে দেড়যুগে দুই লক্ষ কেজি থেকে উৎপাদন বেড়ে প্রায় ১০ লক্ষ কেজিতে পৌঁছেছে বলে জানান তারা।
বৃহষ্পতিবার (৮ র্মাচ) রামগড় চা বাগান সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চা গাছগুলো সবুজ ও সতেজ। গাছে গাছে গঁজিয়েছে নতুন কুঁড়ি। বাগানের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে নয়নাভিরাম সবুজের দৃশ্য। বাগানের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিশালায়তনের লেকের পানি ভূ গর্ভস্থ পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়ে স্প্রিংকলারের সাহায্যে বৃষ্টিরমত ছিঁটানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনাবৃষ্টি ও খরায় বাগানকে সুরক্ষিত রাখতে বাগানের লেকের পাড়ে ৩৬ হর্স পাওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প এবং জেনারেটর বসিয়ে বাগানজুড়ে সেচ ব্যবস্থা সচল রাখা হয়েছে। সেচ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাগানের প্রতিটি লাইনে মাটির নীচে থাইল্যান্ড থেকে আনা পাইপ বসানো  হয়েছে। স্থায়ী এ সেচ লাইনের মাধ্যমে আধুনিক যন্ত্র স্প্রিংকলারের সাহায্যে বৃষ্টির মত পানি ছিঁটানো হয়। বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক মো: জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, স্থায়ী সেচ ব্যবস্থার কারণে অনাবৃষ্টি বা খরায়ও এ বাগানে উৎপাদন থেমে থাকে না। প্রতি বছরের মত এবারও আগাম পাতা চয়ন শুরু হয়েছে। ২০০৪ সালে পেড্রোলো লিমিটেড কোম্পানি বাগনটির মালিকানা নেয়ার সময় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল দুই লক্ষ কেজি। এখন উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১০ লক্ষ কেজি। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমাদের দেশেও সময়মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় না। ফলে এখন আর চা বাগানের গাছ বাঁচাতে বৃষ্টির জন্য প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। খরা মোকাবেলার জন্য প্রতিটি বাগানেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক জলাশয় ও সেচ ব্যবস্থার থাকা দরকার।

Loading