সাভারে ভূয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানি খুলে প্রতারণা; গ্রেফতার ১৫

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ২৫, ২০২২

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে ভূয়া ইন্সুরেন্স কোম্পানি খুলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড়কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের ৫ রিং লিডারসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া হস্তান্তর করেছে র‌্যাব-৪।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সাভার মডেল থানায় তাদের হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাতে সাভারের শিমুলতলা এলাকার শিমুলতলা সুপারমার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন নড়াইল জেলার মোঃ এরশাদ শেখ (৩১), মোঃ নাঈম শেখ (২৬), সাতক্ষীরা জেলার মোঃ শহিদুল্লাহ (২৩), ভোলা জেলার মোঃ ইলিয়াস আহম্মেদ (২৫), কুষ্টিয়া জেলার মোঃ জামাল উদ্দিন (৫২), খুলনা জেলার মোঃ জিয়াউর রহমান (২৫),

নরসিংদী জেলার মোঃ মহসিন কবির (৪২), গোপালগঞ্জ জেলার মোঃ কামরুল শেখ (১৯), খুলনা জেলার মোঃ আজিজুল ইসলাম (২০), ফরিদপুর জেলার হুমায়ূন শেখ (২১), খুলনা জেলার মোঃ রাহাত অনিক (১৯),

ভোলা জেলার মাওলানা মাইনুদ্দিন (২৩), মৌলভীবাজার জেলার মোঃ বারহাম মিয়া (২০), ভোলা জেলার মোঃ হিজবুল্লাহ (১৯), ও ফরিদপুর জেলার মোঃ চাঁন মিয়া (১৯)।

র‌্যাব জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সাভারের ‘‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি’’ নামের একটি ভূয়া ইন্সুইরেন্স কোম্পানিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এসময় ৫ জন রিং লিডারসহ ১৫ জন প্রতারককে আটক করা হয়। এসময় ১ টি সিপিইউ, ১ টি মনিটর, ২ টি প্রিন্টার, ১৫ টি রেজিস্টার, ১৪ টি মোবাইল, ১৪ টি সীম কার্ড, ৯ টি সীল, ৩০ টি ভিজিটিং কার্ড, ৪ টি আইডি কার্ড, ২ টি ব্যানার,

২৫০ টি বায়োডাটা ফরম, ২০০ টি লিফলেট, ১ টি ক্যাশ ভাউচার এবং ৮ টি আবেদন ফরম জব্দ করা হয়। তারা ব্যবসার আড়ালে বিভিন্ন ব্যক্তিকে কোম্পানিতে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো।

প্রতারণার কৌশলঃ

এই প্রতারক চক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নামের একটি ভুয়া কোম্পানি খুলে বিভিন্ন পদে ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেয়।

বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে চাকুরী প্রত্যাশী শতশত যুবক-যুবতি ও ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের বিজ্ঞাপন সরলমনে বিশ্বাস করে। প্রথমে তাদের কাছ থেকে রেজিষ্টেশন ফি হিসেবে ৫২০ টাকা করে নিত।

পরে চাকুরীর নিশ্চয়তা ও মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত।

ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, এ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ হতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্সুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত।

চাকুরী পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারে ভুক্তভোগীরা।

পরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করত চক্রটি।

সিপিসি-২, র‌্যাব-৪ আরও জানান, এই প্রতারক চক্র এর আগেও প্রতারণার দায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার আটক হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উক্ত প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত প্রতারণার সত্যতা স্বীকার করেছে এবং এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানার মামলা দায়ের করে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এব্যাপারে সাভার মডেল থানার পুলিশ বলেন, র‌্যাব তাদের থানায় হস্তান্তর করেছেন দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Loading