প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানছে না পুলিশ

প্রকাশিত: ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ২, ২০২২

বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের আচরণ আরেক রকম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানছে না পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী একধরনের আশ্বাস দিচ্ছেন। আর যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা বিরোধী দলের সঙ্গে অন্য রকম আচরণ করছে। জাতীয় সংসদে গতকাল পয়েন্ট অব অর্ডারে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে আওয়ামী লীগ কেন মাঠে নামছে, এমন প্রশ্ন রেখে রুমিন বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে, নাশকতা ঠেকাতে তারা মাঠে আছে। নাশকতা ঠেকানোর জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকতে হলে পুলিশ প্রশাসন পুষে লাভ কি?
রুমিন ফারহানা বলেন, সরকার দাবি করে দেশে গণতন্ত্র আছে। আমি যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নিই দেশে গণতন্ত্র আছে, তাহলে প্রশ্ন করি, এত ভয় কেন? বিরোধী দল বিক্ষোভ কর্মসূচি করছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছে, মিছিল করছে। সেটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেই টুকু সহ্য করার সাহস ও মুরোদ যদি না থাকে, রাজনীতি ছেড়ে দেন। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন? বিরোধী দলকে দমন করে আর কয় দিন রাজনীতি করবেন?’ বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, সরকার যদি মনে করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কয়দায় খেলা হবে বলে অন্ধকারে কিংবা খেলা হবে বলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, তাহলে ভুল করবে।
ভোলায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির দুজনের মৃত্যুর কথা তুলে ধরে রুমিন বলেন, সেই হত্যাকাণ্ডের কোনো তদন্ত হয়নি। কিন্তু বরগুনায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ছাত্রলীগের গায়ে পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়ার আগেই পুলিশ বদলি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ২২ আগস্ট শুরু হওয়া বিএনপির কর্মসূচিতে ৭০টির বেশি জায়গায় হামলা হয়েছে।
রুমিনের বক্তব্যের জবাব দেন সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, তিনি সাধারণত পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়ান না। কিন্তু তার জন্মস্থান ভোলা। প্রকৃত ঘটনা অনেকে জানেন না। সেদিন মিছিল শুরুর আগেই বিএনপির নেতা–কর্মীরা লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল ছুড়ে পুলিশকে আক্রমণ করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা সেদিন মাঠেই নামেননি। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ভোলায় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা বাড়িঘরেই থাকতে পারেননি। তোফায়েল বলেন, তিনি রুমিন ফারহানাকে স্নেহ করেন। কিন্তু রুমিন এমনভাবে কথা বলেন যেন তিনি ঝগড়া করতে এসেছেন। একতরফা বক্তব্য দেওয়া ভালো নয়। বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন শান্ত মেজাজে কথা বলেন।
এদিকে বিএনপির অপর সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদপ্র ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য আসলেই চক্রান্ত হচ্ছে কি না, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে গতকাল তিনি এ দাবি জানান।
গত বুধবার সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত হচ্ছে। অর্থের বিনিময়ে সরকারি দলের লোকজনও এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত। আবুল কালাম আজাদের ওই বক্তব্য উদ্ধৃত করে হারুন বলেন, সরকারি দলের একজন সংসদ সদস্য সংসদে দাঁড়িয়ে এ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে স্পষ্ট জানতে চান। এটি উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। আসলেই এ ধরনের চক্রান্ত হচ্ছে কি না, কারা এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত, তা বের করতে গভীরভাবে তদন্ত করার দাবি জানান হারুন।

Loading