কাপড় কী ভাবে পাক-পবিত্র করবেন?

প্রকাশিত: ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ , জুন ৮, ২০২০

পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ৷ ইবাদত করার আগে পবিত্রতা অর্জন করা ফরয। তাই ইসলাম সর্বদা পবিত্র থাকার নির্দেশ দিয়েছে৷ শরীরের সঙ্গে সঙ্গে পরিধানের কাপড়ও পাক-পবিত্র হতে হবে। কেননা কাপড়ে নাপাক বস্তু যদি লেগে যায়, তবে আপনার ইবাদত গ্রহণযোগ্য হবে না। কাপড়ে নাপাক বস্তু লাগাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে কাপড় ভালোভাবে পাক-পবিত্র করে নিতে হবে। 

কী ভাবে কাপড় পাক-পবিত্র করবেন, তা এবার জেনে নিন…

* কাপড়ে যদি রক্ত কিংবা পায়খানা লেগে যায়, তবে তা পাক করার নিয়ম হল এই গাঢ় নাজাছাত (যা দেখা যায়) এমনভাবে ধৌত করতে হবে যেন দাগ না থাকে।
একবার বা দুইবার ধোয়ায় দাগ চলে গেলেও পাক হয়ে যাবে। তবে তিনবার ধোয়া মোস্তাহাব। তিনবার ধোয়া সত্ত্বেও যদি কিছু দাগ বা দুর্গন্ধ থেকে যায় তাতে কোন দোষ
নেই। সাবান বা অন্যকিছু লাগিয়ে দাগ বা দুর্গন্ধ দূর করা যায়, তবে ওয়াজিব নয়।

* পানির মত তরল নাপাক বস্তু কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হলো তিনবার ধৌত করা এবং প্রত্যেক বার কাপড় ভালো করে নিংড়ানো। তৃতীয়বার খুব জোরে
নিংড়াতে হবে। ভালমত না নিংড়ালে কাপড় পাক হবে না।

* কাপড়ে তরল নাপাক বস্তু লাগলে ধোয়া ব্যতীত অন্য কোন উপায় পাক করা যায় না। পানির দ্বারা ধুয়ে যেমন পাক করা যায়, তদ্রূপ পানির ন্যায় তরল যেমন গোলাপ
জল, রস, সিরকা প্রভৃতি জিনিস দ্বারাও ধুয়ে পাক করা যায়। কিন্তু যেসব জিনিস তৈলাক্ত তা দ্বারা ধুলে পাক হবে না, যেমন দুধ, ঘি, তেল ইত্যাদি।

* ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়া হলে মেশিন যেহেতু নিয়ম মত কাপড় নিংড়াতে পারে না এবং নাপাক কাপড়ের সঙ্গে থাকা পাক কাপড় একত্রে ভিজানোর কারণে পাক
কাপড়ও নাপাক হয়ে যায়। অতএব, মেশিনে কাপড় ধোয়ার পূর্বে নাপাক কাপড়গুলো আগে পৃথকভাবে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করে নিতে হবে। কিংবা পরে সব
কাপড়গুলোকে পৃথকভাবে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করে নিতে হবে।

* লন্ড্রিতে কাপড় ধোলাইর ক্ষেত্রে সাধারণত তারা অনেক কাপড় একসঙ্গে ভিজিয়ে রাখে। এর মধ্যে কোনও কাপড়ে নাপাক থাকলে সব কাপড়ই নাপাক হয়ে যাবে।
তখন সবগুলোকে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করা প্রয়োজন হবে। কিন্তু লন্ড্রিতে তা নিশ্চিত করা কঠিন। তাই লন্ড্রি কিংবা ড্রাই ওয়াশের মাধ্যমে কাপড় ধোলাই করার ব্যাপারে
সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

* দুই পাল্লাবিশিষ্ট কাপড়ের এক পাল্লা বা তুলা ভরা কাপড়ের এক দিক যদি নাপাক হয় এবং অন্য পাল্লা বা অন্য দিক যদি পাক হয়, এমতাবস্থায় উভয় পাল্লা যদি
একত্রে সেলাই করা থাকে, তাহলে পাক পাল্লার উপর নামাজ পড়া দূরস্ত হবে না। সেলাই করা না হলে নাপাক পাল্লা নীচে রেখে পাক পাল্লার উপর নামাজ পড়া দূরস্ত
হবে। তবে শর্ত এই যে, পাক পাল্লা এত মোটা হওয়া চাই যাতে এর উপর থেকে নাপাকী পাল্লার রং দেখা না যায় এবং গন্ধও টের না পাওয়া যায়।

* তুলার গদি, তোষ, সোফা অথবা লেপে যদি মল-মূত্র বা অন্য কোন নাপাক বস্তু লাগে, তাহলে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে। যদি নিংড়ানো কঠিন হয়, তাহলে ভাল
করে তিনবার পানি প্রবাহিত করতে হবে। প্রতিবার পানি প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দিবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায়, তারপর আবার পানি প্রবাহিত করতে
হবে। এভাবে তিনবার করলেই পাক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তুলা, ফোম ইত্যাদি বের করে ধৌত করার প্রয়োজন নেই।

সূত্র: ইসলামী নানা গ্রন্থ।

Loading