জরুরি অনুমোদন পাচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন

প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ , নভেম্বর ২১, ২০২০

করোনা প্রতিরোধে ‘৯৫ ভাগ কার্যকর’ ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও এর সহযোগী জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেক। প্রতিষ্ঠান দুটির যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকক্ষের কাছে আবেদন করে তারা।

শনিবার (২১ নভেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদন খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি টিকাটি করোনা প্রতিরোধে যথেষ্ট কার্যকর হলে তা যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) কর্তৃপক্ষ।

ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার তথ্যা পর্যালোচনা করতে মার্কিণ ওষুধ প্রশাসন এফডিএ কত সময় নিবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ডিসেম্বরের প্রথমভাগেই ভ্যাকসিনটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী মার্কিন সরকার।

ভ্যাকসিনটির শেষ ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে যে ফলাফল আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সম্ভাব্য এই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ ভাগ কার্যকর রয়েছে ৬৫ বছরের উর্ধে বয়সীদের শরীরে।

তবে এফডিএ’র অনুমোদন পাওয়ার আগেই ফাইজার ও বায়োএনটেকের সঙ্গে ৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনা চুক্তি করে ফেলেছে বৃটিশ সরকার। আর ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশটি এক কোটি ডোজ হাতে পাবে এমনটি জানিয়েছে বিবিসি।

তবে এই মুহুর্তে একটা কার্যকরি ভ্যাকসিন প্রয়োজন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই। এখন পর্যন্ত করোনায় দেশটির আড়াই লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আর করোনার দ্বিতীয় ধাপের ঢেউয়ে জুনের পর গত ২০ নভেম্বর দেশটির মারা গেছে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।

এদিকে ফাইজার ও বায়োএনটেক বলছে, তারা শুধু মাত্র এফডিএ’র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যদি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ভাগে মার্কিন কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয়, তাহলে তারা ভ্যাকসিনটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সরবরাহ করার মত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

তবে ভ্যাকসিনটি অনুমোদন পেলে তা হবে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ জেনেটিক কোড দেওয়ার পর যেখানে এফডিএ কোনো ভ্যাকসিন অনুমোদনে গড়ে সময় নেয় আট বছর, সেখানে ১০ মাসেই অনুমোদন পাবে এই ভ্যাকসিনটি।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা বলেছেন, জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে করা আবেদন বিশ্বে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের এই পথচলার জন্য মাইলফলক।

ফাইজার ও বায়োএনটেকের এই ভ্যাকসিনটি সারা বিশ্বে ৪১ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। তিন ধাপে চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে ভ্যাকসিনটি সব বয়স, বর্ণ ও নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকর। আর তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই এই ভ্যাকসিনটি।

এমআরএনএ প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিনটি। এ পদ্ধতিতে ভাইরাসের জেনেটিক কোড ইনজেকশনের মাধ্যমে মানবদেহে দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা হবে; যা মোকাবিলা করবে করোনার সংক্রমণ।

Loading