শার্শায় প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় “শেখ রাসেল দিবস”-২০২৩ উদযাপণ

প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ , অক্টোবর ১৯, ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের আজ ৬০তম জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবরের এই দিনে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি’র ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সাল থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এবার দিবসটি পালনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে তাকেও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।

এ উপলক্ষে শার্শা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে র‌্যালী,আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।

বুধবার(১৮ অক্টোবর) সকাল ১০ টা থেকে কর্মসূচি শুরু করা হয়। উপজেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত “বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে” প্রথমে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। বেনাপোল পৌরসভার মেয়র- মোঃ নাসির উদ্দিন,শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ আকিকুল ইসলাম,বেনাপোল পোর্টথানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ কামাল হোসেন ভূঁইয়া, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসনের সর্বস্তরের পদস্থ কর্মকর্তা/ কনস্টেবল সহ স্কুল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ বর্ণাঢ্য র‍্যালি তে অংশ নেয়।

র‍্যালি তে নেতৃত্ব দেন শার্শা উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল। র‍্যালি টি উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে শুরু করে শার্শা শহর এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে পুণরায় পরিষদ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

বেলা ১২ টার দিকে পরিষদ সভাকক্ষে শুরু হয় আলোচনা সভা অনুষ্ঠান। সভাপতিত্ব করেন নির্বাহী কর্মকর্তা-নারায়ণ চন্দ্র পাল। এসময় সেখানে উপস্থিত সকল অতিথিবৃন্দ অংশ নেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে ৭৫’র ১৫ আগষ্টে নিহত শহীদ শেখ রাসেল সহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি সন্মননা জ্ঞাপণ করে আলোচকবৃন্দরা বলেন-
“শেখ রাসেল আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আছে তার পবিত্র স্মৃতি, বাংলাদেশে সব শিশুর মধ্যে আজও আমরা শেখ রাসেলকে খুঁজে পাই। এই শিশুদের রাসেলের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে, এমন এক উজ্জ্বল শিশুর সত্তা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের শিশুরা বড় হউক, খুনিদের বিরুদ্ধে তাদের মণের মধ্যে তীব্র ঘৃণা জন্মাক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে দেশের সব শিশু এগিয়ে আসুক”।

“১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার ঘৃণ্য শত্রু খুনি-ঘাতক চক্রের নির্মম বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নরপিশাচরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করে। রাসেল তখন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। শিশু শেখ রাসেলের দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিরা এখনও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পলাতক। এই পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা আজ সময়ের দাবি”।

বক্তারা আরও বলেন,”বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তাদের সেই অপচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। শহীদ শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণদের কাছে পরম আদরের নাম।

অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকারবঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ-লোকালয়ে শেখ রাসেল আজ এক মানবিক সত্তায় পরিণত হয়েছে। মানবিক চেতনাসম্পন্ন সব মানুষ শেখ রাসেলের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শোককে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলার প্রতিটি শিশু-কিশোর ও তরুণের মুখে হাসি ফোটাতে আজ সকলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।

Loading