পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ৭:০১ পূর্বাহ্ণ , জুলাই ৪, ২০২২

কক্সবাজারের খুরুশকুলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়ে হামলার আশংকায় নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে। আর জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকে। এরপরও প্রাণ হারাতে হলো ছাত্রলীগ নেতাকে। সংঘবদ্ধ চক্র পুলিশের উপস্থিতিতে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিনকে। এ ঘটনায় আরও চারজন আহত হয়েছেন।

রোববার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খুরুশকুলের ডেইলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত ফয়সাল কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ওই এলাকারই মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল করিম মাদু জানান, খুরুকুল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন ছিল রোববার। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। সম্মেলন দেখতে গিয়েছিলেন ফয়সাল। ফয়সালের ওপর হামলা করতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র বাইরে অবস্থান করার বিষয়টি টের পেয়ে তিনিসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের অবহিত করেন।

তিনি বিষয়টি কক্সবাজার সদর থানার ওসিকে অবহিত করলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আওয়ামী লীগ নেতারা ফয়সালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। কিন্তু পুলিশের তিনজন সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হান তাকে একটি অটোরিকশায় অন্য জায়গায় পাঠানোর চেষ্টা করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুলিশের সদস্য বাড়ানোর এবং পুলিশের গাড়িতে ঘটনাস্থল থেকে তাকে সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু পুলিশ অটোরিকশায় তাকে এবং কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে দিয়ে পেছনে পেছনে যেতে থাকে। কিছুদূর যেতেই সংঘবদ্ধ চক্রটি ফয়সালের ওপর হামলা চালায়। এতে ফয়সাল নিহত এবং অপর চারজন আহত হন।

কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন জানান, হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের সম্মেলন পরবর্তী এ ঘটনা সংগঠিত হয়। পুলিশ সদস্য কম হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার প্রাণ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।

এ হামলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কেন্দ্রিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, হামলাকারীরা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা জরুরি।

ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল নিহতের ঘটনায় সদর হাসপাতালে ভিড় করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। পুলিশ তার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এ ঘটনায় সদর হাসপাতালে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হলেও তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে জানতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনীর-উল গীয়াস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। – সময় সংবাদ

Loading