সুন্দরবনের গাড়ি চালানোর ফাঁকে ডাকাতি করতো পিবিআই এর হাতে গ্রেফতার জসিম 

প্রকাশিত: ১:৪২ পূর্বাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১

সাভারের চাঞ্চল্যকর রবিউল ইসলাম লস্কর (৪২) নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের আরো ১ সদস্য জসিম মিয়া(৩৫)কে গ্রেপ্তার করেছে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন) পিবিআই ঢাকা জেলা। তিনি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে কাভার্ড ভ্যান চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ১৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত জসিম মিয়া (৩৫) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার আলিপুর গ্রামের মৃত লেছু মিয়ার ছেলে । রবিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তুরাগ থানা এলাকার ধউর চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ডাকাতির সাথে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাকে সোমবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করানোর জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয় ।

গ্রেফতারকৃত জসিম সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যান চালাত । এ পর্যন্ত এ মামলায় গ্রেফতারকৃত ১৩ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ মামলার সাথে জড়িত আরো ৪-৫ জনের নাম এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। জসিম রবিউল হত্যাকান্ডের আগে থেকেই সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করত। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে সে অপকর্ম করতো।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৫ই অক্টোবর নিহত হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লস্কর ভাগিনার সাথে দেখা করার জন্য কর্মস্থল মিরপুর থেকে সাভারের জামগড়া এলাকায় যান। ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টার সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে মেয়ের সাথে শেষবারের মত কথা বলেন তিনি। পরে রাত ১২টার দিকে একই মোবাইল থেকে তার মায়ের ফোন নম্বরে ফোন করে রবিউল খুন হয়েছে বলে জানায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়ারপুর এলাকায় যমুনা ন্যাচারাল পার্কের গেটের পাশ থেকে রবিউল ইসলাম লস্করের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলার এসআই সালেহ ইমরান।

এ ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গতবছর ১৩ই অক্টোবর সাভার থেকে ডাকাত দলনেতা বসির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও ডেমরা থেকে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সালেহ ইমরান জানান, গত ৪ অক্টোবর গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের নিরালা পরিবহনের একটি বাস কুয়াকাটা যাওয়ার কথা বলে ৩ দিনের জন্য রিজার্ভ নেয়। পরে ওই বাস দিয়ে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়িতে ডাকাতির কাজ শেষ করে ফেরার সময় নিহত রবিউল আশুলিয়ার নবীনগর থেকে ওই বাসে উঠে।

বাসের ভেতরে ডাকাতির সময় রবিউল চিৎকার করলে তাকে ডাকাত সদস্যরা চেপে ধরে ও দলনেতা হুইলরেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে। এসময় ঘটনাস্থলেই রবিউল মারা যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ড্রাইভার ও হেলপার। তারা সাভার, ধামরাই ও যাত্রাবাড়িতে থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দল প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে বাসে ডাকাতি করে আসছিল। বিভিন্ন রুটের গাড়ি ভাড়া নিয়ে স্টিকার পরিবর্তন করে রং দিয়ে বিভিন্ন রুটের নাম লিখে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি করে আসছিলো চক্রটি

Loading