অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ থাকবে

প্রকাশিত: ৯:৪৩ অপরাহ্ণ , মে ১৯, ২০২১

অপ্রদর্শিত আয়কে অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরের বাজেটেও অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘যতদিন অর্থনীতিতে অপ্রর্শিত অর্থ থাকবে, ততদিন এ সুযোগ অব্যাহত রাখবে সরকার।’

বুধবার (১৯ মে) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ক্রয় মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনলাইনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের কিছুক্ষেত্রে পদ্ধতিগত কারণে অনেক সময় টাকা অপ্রদর্শিত থাকে। এসব অর্থ যদি প্রদর্শন করার সুযোগ দেওয়া না হয়, অর্থনীতির মূলধারায় না আনা হয়, তাহলে অর্থনীতি ঠিকভাবে কাজ করবে না। তিনি আরও বলেন, বুঝতে হবে কী কী কারণে অর্থ অপ্রদর্শিত হয়। জমি রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ফি অনেক বেশি। আবার মৌজা মূল্য অনেক কম। মৌজা মূল্য যদি বাজার দরের সমান হত, তাহলে কোনো অপ্রদর্শিত টাকা হত না। এই যে পদ্ধতির কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছে অপ্রদর্শিত টাকা থাকে। সেজন্য তারা বিপদে পড়ে। এজন্য সরকার ক্রমান্বয়ে আয়কর হার, জমির নিবন্ধন ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি কমিয়ে দিচ্ছে। যাতে সবাই প্রকৃত মূল্য প্রকাশ করতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, আগে আয়কর হার অনেক বেশি ছিলো, যে কারণে অনেকে কর দিতো না। এজন্য সরকার আয়কর পর্যায়ক্রমে কমিয়ে নিয়ে আসছে। বাংলাদেশের মত বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যাতে একইরকম চিত্র পাওয়া যায়। সেরকম ব্যবস্থা সরকার নিচ্ছে। আশা করা যায় এক সময় অপ্রদর্শিত টাকা অর্থনীতিতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

আগামী বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শনের সুযোগ চলতি অর্থবছরের মত একই রকম শর্তে থাকবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেটা এখনই বলা যাবে না। এজন্য বাজেট পেশের দিন আগামী ৩ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত সাদা করা যাচ্ছে। এছাড়া জমি ও ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে বর্গফুট অনুযায়ী কর পরিশোধ করে প্রদর্শন করা বা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা যাচ্ছে।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের প্রভাবে অর্থনীতি গতিশীলভাবে এগোচ্ছে। বিশ্বাস করতে হবে যে, সামস্টিক অর্থনীতির প্রত্যেকটি সূচক উঠতির দিকে। মূল্যষ্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয়, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বেড়েছে। কমেছে খেলাপি ঋণ। পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেড়েছে। রাজস্ব আয় ইতিবাচক। লেনদেনের ভারসাম্যই পক্ষে। চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি সূচক অন্যদের চেয়ে ভালো। এসবই প্রণোদনা প্যাকেজের ফল। মুদ্রা সরবরাহ অনেক বেড়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা রয়েছে। এসব কারণে মাথাপিছু আয় বেড়েছে।

এসএমই খাতে প্রণোদনার ঋণ বিতরণের বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, মধ্যস্বত্ত্বভোগীর বাইরে গিয়ে ছোট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য দেরি হচ্ছে। যাদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাদের অ্যাকাউন্ট খোলানো হচ্ছে। আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়েছে।

বুধবারের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দুটি ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

Loading