শীতে যে কারণে বাড়বে করোনার প্রকোপ

প্রকাশিত: ১০:২০ পূর্বাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

শীতকালে চলমান মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের এ মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে শীতকালে করোনা পরিস্থিতি কতটা খারাপ হতে পারে? কেনই বা এ আশঙ্কা?

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সদ্য সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং অণুজীব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সানিয়া তাহমিনা গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার সংক্রমণ গত বছর শুরু হয়েছিল শীতকালেই, ডিসেম্বর মাসে। তখন দেখা গেছে, শীতপ্রধান দেশগুলোয় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে সারা বিশ্বেই আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শীতকালে এ রোগটির প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, আসছে শীতে করোনাভাইরাস মহামারি আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে শীতের আগে থেকেই উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

যে তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাসটি বাড়ে, সহজে সংক্রমিত করতে পারে বা নিজের দ্রুত বিস্তার ঘটাতে পারে, শীতকাল সেটার জন্য আদর্শ। এ কারণেই ধারণা করা হচ্ছে শীতকালে এ ভাইরাসের বিস্তার বেশি হতে পারে। এই সময়ে বাতাসে আদ্রতা কম থাকায় হাঁচি, কাশি দেয়া হলে বাতাসে জীবাণুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলো অনেকক্ষণ ধরে ভেসে থাকে। গরমের সময় সেটা যখন দ্রুত ধ্বংস হয়ে যায় কিন্তু শীতের সময় অনেকক্ষণ ধরে বাতাসে থাকে। ফলে মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে।

করোনা ভাইরাসের জন্য বিশেষ করে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকূল বলে দেখা গেছে। সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে তা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। কিন্তু শীতের সময় অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণও কম থাকে। কিন্তু শীতকালে করোনা ভাইরাসের বিস্তার বেশি হয়, এমন কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। অনেক সময় দেখা যায়, সাধারণ সর্দি-কাশির মতো অনেক রোগ শীতকালে বেড়ে যায়।

যেহেতু এখনো এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী টিকা বাজারে আসেনি, তাই সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাই একে প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। হাত ধোয়া, হাঁচি কাশির সময় শিষ্টাচার রক্ষা করা ইত্যাদি যে বিষয়গুলো এতদিন ধরে বলা হচ্ছে, সেটাই আরো কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়গুলোও অব্যাহত রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন যে, এসব ক্ষেত্রে লকডাউনের মতো বিষয় আপাতত ভাবা হচ্ছে না।সূত্র: বিবিসি

Loading