কুড়িগ্রামে অষ্টমীর স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল

প্রকাশিত: ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ , এপ্রিল ১৭, ২০২৪

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ঠাকুর-দেবতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করে পাপ মোচনের জন্য অষ্টমীর স্নানে লাখো পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে।

মঙ্গলবার ভোর ৪টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত মূল সময়কে ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভারত, চীন ও নেপাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ঐতিহ্যবাহী এই স্নানে শামিল হয়।

এ উপলক্ষে গত তিনদিন ধরে চিলমারীতে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী ব্রহ্মপুত্র নদে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের স্নানের মধ্য দিয়ে সকল পাপ মুছে ফেলার জন্য প্রার্থনা করেন।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম এলাকার জয়া রানী জানান, এবারে স্নানের জায়গা নির্দিষ্ট করায় খুব ভালো হয়েছে। এদিকের পরিবেশটা ভালো। নদীর তীরে ব্লক দেয়ায় মানুষ ধুলোবালু থেকে রক্ষা পেয়েছে।

লালমনিরহাটের শিয়াল খাওয়া এলাকার জিতেন্দ্র নাথ সরকার জানান, বিগত ১৯৬৯ সাল থেকে এখানে পাপ মোচনের জন্য আসছি। যুদ্ধের সময়টা বাদে পরবর্তীতে প্রতিটি বছর এখানে স্নান করে যাই। এবারের স্নানের স্থান ও ব্যবস্থাপনা খুবই ভাল হয়েছে।

পঞ্চগড় থেকে আসা পুরোহিত অজয় চক্রবর্তী জানান, পরশুরামের মাতৃহত্যার পাপ মোচনের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে এসে স্নান করেছেন। ধর্মীয় ওই রীতি মানার জন্য আমরা প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে প্রাত:স্নান করি।

এদিকে পুণ্যার্থীদের বিশাল এ জনতাকে সামলাতে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন থেকে নেয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। এবারের স্নান চলে সারাদিনব্যাপী। নদীর তীরে বসেছে মেলা।

এদিকে পুণ্যার্থীদের আগমন ও স্নানের পর নারী-পুরুষের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, চিলমারী উপজেলা শাখার সভাপতি শচিন্দ্রই নাথ বর্মন জানান, প্রায় দু’লাখ মানুষ প্রতিবছর এ মেলায় অংশ নেয়।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে অষ্টমীর স্নানে মেলা স্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য নলকূপ স্থাপন, মহিলাদের কাপড় বদলানোর জন্য দু’শতাধিক তাঁবু টানানো হয়। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম জানান, আমরা গত পরশু মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেছি। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সেখানে পোষকধারী ছাড়াও সাদা পোষাকে নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়াও আমরা উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সাথে যৌথ প্রয়াসে নাগরিকরা যাতে সুন্দরভাবে অষ্টমীর স্নান সম্পন্ন করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Loading