পাত্রী দেখতে গিয়ে যুবক নিখোঁজ, আসামী কাউন্সিলর, সুত্রপাত স্বর্ণ গায়েব

প্রকাশিত: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ , নভেম্বর ১৫, ২০২৩

বেনাপোলে স্বর্ণেরবার আত্নসাৎ এর অজুহাতে ওমর ফারুক (২৬) নামের এক যুবককে অপহরণ করা হয়েছে। অপহৃত শার্শা থানাধীন টেংরালী গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে ও পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। অপহরণের ৩দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার হয়নি অপহরণকারী।এ ঘটনায় অপহরণের শিকার ওমর ফারুকের মাতা মোছাঃ ফিরোজা বেগম (৫০) বেনাপোল পোর্টথানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-১৫ ও তারিখ ১৪-১১-২-০২৩ ইং।

এজহার সূত্রে মামলার আসামীরা হলো যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানাধীন বেনাপোল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বড় আচড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশীদের ছেলে কামাল হোসেন (৪০), সাদীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ এজাজ রহমান (২৮),শার্শা থানাধীন শালকোনা গ্রামের ইমান আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৫) ও একই গ্রামের বাটুলের ছেলে পলাশ হোসেন (২৬)। এছাড়াও মামলায় ৮/১০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

মামলাটির বাদী লিখিত এজাহারে উল্লেখ করেছেন গত ১১ নভেম্বর (২০২৩ইং) তারিখ দুপুরে ওমর ফারুক বাসা হতে কালো রং এর পালসার যোগে পাত্রি দেখার উদ্দ্যেশে বাসা হতে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি। তার ফোনে কল দিলেও রিসিভ করেনা।পরবর্তী দিন ১২ তারিখ সকালে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি ফোন করে বলে যে, ওমর ফারুক তাদের স্বর্ণ মেরে দিয়েছে এ কারণে তাদের নিকট সে আটক আছে। মামলার বাদীকে বিশ্বস্ত লোক নিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের ৩নং গেটের মুখে আসতে বলে। সেমত আমি বেনাপোল আসলে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি এসে আমাদের নিয়ে বেনাপোল পোর্টথানাধীন গাজীপুর গ্রামের জনৈক শাহাবুদ্দিন গোলদারের তিনতালা বিল্ডিং এর তৃতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমি আমার ছেলেকে চেয়ারে বসা গুরুতর জখম অবস্থায় দেখতে পাই। সেখানে থাকা ৮/১০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি জানাই আমার ছেলে তাদের স্বর্ণ মেরে দিয়েছে। তাকে অপহরণ করে আটক রেখে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রচন্ড মারপিট করে জখম করেছে বলে তিনি আরো উল্লেখ করেন। মারপিটের কারনে আমার ছেলে তাদের মাল আমার বসত বাড়ীর পূর্বপাশে আবর্জনার মধ্যে আছে জানালে আসামীরা আমাদের সাথে নিয়ে আমাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজা খুজি করে না পেয়ে পুনরায় আমাদের সাথে করে বেনাপোল আনে। উক্ত স্থানে পুনরায় গিয়ে আমি আমার ছেলেকে দেখতে পাইনা। কারণ জিজ্ঞাসায় আসামীরা বলে আমার ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গেছে তাই আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলে। অধ্যবদী আমার সন্তানের কোন খোঁজ মেলেনী।

চাঞ্চল্যকর এই অপহরণ ঘটনা জানাজানি হলে বন্দরনগরী বেনাপোলের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে। বেনাপোল পোর্ট থানা হতে ২০০গজ দূরে ঘটনাটি ঘটলেও এখনো পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ভিকটিম উদ্ধারসহ অপহরণকারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা বেনাপোল পোর্টথানার সাব ইন্সেপেক্টর এস আই শংকর বিশ্বাস মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ভিকটিম উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

এলাকা জুড়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে স্বর্ণবহনের সময় বহনকারীর কাছ হতে আনুমানিক ৩ কোটি টাকার স্বর্ণবার ছিনতাই করা হয়েছে ও ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছে।

বেনাপোলে নামে মাত্র অনেকে বড় ব্যবসায়ী আছে যারা স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত, তারা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ গেছে৷ নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার জমির মালিক বনে গেছে, নির্মাণ করেছে বড় বড় অট্রলিকা ও মার্কেট ৷ এদের আবার অনেকের বাড়ি বেনাপোলের সীমান্ত এলাকায় ৷

ভূক্তভোগী পরিবারসহ এলাকবাসীর দাবি দ্রুত অপহৃত উদ্ধার ও অপহরণ রহস্য উদঘাটন পূর্বক অপহরণকারীদের মুখোস উন্মোচন করার।

বেনাপোলের একাধিক সূত্র জানায় ইতিপূর্বেও মামলার এজাহার ভূক্ত আসামীরা স্বর্ণবার ছিনতাই কান্ডে জড়িত এবং এদের আশ্রয়দাতা সমাজের বড় বড় রাজনৈতিক রাঘববোয়াল। প্রশাসনিক তৎপরতার অভাবে সেসকল যাত্রায় তারা নানা নাটক সাজিয়ে গাঁ ঢাকা দিতে সফল হয়েছে।

Loading