এমপি ও সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন পাইকগাছা-কয়রার যোগাযোগ ব্যবস্থায় হবে ব্যাপক উন্নয়ন, নির্মাণ হবে কয়েকটি ব্রিজ

মিলন দাশ মিলন দাশ

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬:১৩ অপরাহ্ণ , ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

পাইকগাছা-কয়রার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরো কয়েকটি ব্রিজ। বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত ব্রিজ সহ দুই উপজেলার কয়েকটি ব্রিজ। প্রস্তাবিত এবং টেন্ডার কৃত এসব ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলে গোটা নির্বাচনী এলাকা যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত ব্রিজ বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষে প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু’র নেতৃত্বে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা সোমবার (৬ ফেব্রæয়ারি) সকালে ৩টি এলাকা পরিদর্শন করেন। যার মধ্যে উপজেলার গড়ইখালী ও সোলাদানা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বেতবুনিয়া-গড়ইখালীস্থ মিনহাজ নদীর উপর প্রস্তাবিত ব্রিজ নির্মাণ এলাকা। এরপর কর্মকর্তারা সোলাদানা, লতা ও দেলুটী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এরআগে কর্মকর্তারা লস্কর ইউনিয়নের বাইনতলা খেয়াঘাট সংলগ্ন টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া প্রস্তাবিত ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম-সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক মোঃ ভিকারুদ্দৌলা চৌধুরী, সেতু কর্তৃপক্ষের মাস্টার প্লান প্রণয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী, অতিরিক্ত পরিচালক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মোঃ কুতুব আল হোসাইন, স্প্যানিশ ব্রিজ প্রকৌশলী মালভাডোর আরিজা ভিক্টোরিয়া, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম, সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ রিয়াজ উদ্দীন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ফাহাদ হাসান মুবদী, উপজেলা ভাইস শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী, ওসি জিয়াউর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান খান, ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, আব্দুল মান্নান গাজী, জিএম আব্দুস সালাম কেরু, জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম, ¯েœহেন্দু বিকাশ, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন ও রায়হান পারভেজ রনি। উল্লেখ্য, অসংখ্য নদ-নদী ও খাল-বিল নিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দুটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত ছিল। বিগত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে নির্বাচনী এলাকা পাইকগাছা কয়রার যোগাযোগ ব্যবস্থার দৃশ্যপট। ইতোমধ্যে সাড়ে ৩শ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রধান সড়ক উন্নয়ন করায় উন্নত হয়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়া দুই উপজেলার অভ্যন্তরিক সড়ক কার্পেটিং ও পাকাকরণ করায় পাল্টে গেছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দৃশ্যপট। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে সাথে দুই উপজেলার নদ-নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করার মাধ্যমে গোটা নির্বাচনী এলাকা যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনার লক্ষে নেওয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। ইতোমধ্যে শিববাটী, শিবসা, চাঁদআলী, হাড়িয়া সহ কয়েকটি নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। লস্কর-বাইনতলা-কড়–লিয়া নদীর উপর ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে আরো একটি ব্রিজ। ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদে কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব এনেছেন সংসদ সদস্য আলহাজ¦ আক্তারুজ্জামান বাবু। প্রস্তাবনা অনুযায়ী কয়রার গিলাবাড়ীতে কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মাণ করা হবে একটি ব্রিজ। দশালিয়ায় কয়রা নদীর উপর নির্মাণ করা হবে আরো একটি ব্রিজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর আগে খুলনার এক জনসভায় পাইকগাছাতে একটি ব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেটি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্পের আওতায় সোলাদানা, লতা এবং দেলুটী ইউনিয়নের ৩টি নদীর উপর নির্মাণ করা হতে পারে ৩টি ব্রিজ। এসব ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলে একদিকে যেমন দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সারাদেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে। জেলা শহর খুলনার সাথে সহজ হবে যাতায়াত। অপরদিকে এলাকার উৎপাদিত হিমায়িত চিংড়ি, মৎস্য ও কৃষি ফসল দেশের বিভিন্ন স্থানে খুব সহজেই সরবরাহ করা যাবে। এতে এলাকার মানুষের আর্তসামাজিক উন্নয়ন সহ অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটবে সুন্দরবন সংলগ্ন অত্র অঞ্চলে। এছাড়া অপর সম্ভাবনা তৈরী হবে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যেরও উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এ সব উন্নয়ন পরিকল্পনা শুধু পরিকল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রæত বাস্তবায়ন হোক এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

Loading