গোল টেবিল আলোচনা সভায়

কর্ণফুলী নদী ২৪০০ দখলদারের নামের তালিকা প্রকাশ করার দাবী

প্রকাশিত: ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ , জানুয়ারি ২২, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার খ্যাত বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির অনস্বীকার্য অংশ কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখল রোধে নাগরিক অংশীদারত্ব এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে গোল টেবিল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১ জানুয়ারি শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস এম সুলতান হলে আয়োজিত কর্ণফুলী সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি কামাল পারভেজ এর সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন  রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ,বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া,দখল দূষনের বাস্তবতা তুলে ধরে একটি গবেষণা উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক ড. মো আবুল হাসান।  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কর্ণফুলী নদী নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়ে উঠে না। কারণ চট্টগ্রামের একমাত্র প্রধান সমস্যা সমন্বয়হীনতা সবাই উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাজ করে কিন্তু কর্ণফুলী নদী প্রশ্নে একযোগে কাজ করা সময়ের দাবি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর প্যানেল মেয়র মো গিয়াসউদ্দিন বলেন, কর্ণফুলী নদীর সাথে সংযুক্ত প্রায় ৩৭টি খালে পরিচালিত জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেনা বাহিনী। যেহেতু সিডিএ বা সেনা বাহিনী কাজ করে নির্বাহী আদেশে আর  সিটি কর্পোরেশন এর কাজ জনপ্রতিনিধিত্ব বা জন সম্পৃক্ততায় থাকার কারণে জবাবদিহিতার বিষয়টা নিয়ে তাদের কাজ করতে হয়না সেক্ষেত্রে আমি সমন্বয়ের বিকল্প দেখিনা। কাউন্সিলর কাজী মো নুরুল আমিন মামুন বলেন, শীল্প বর্জ্যের ভয়াবহতা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো নুরুল আমিন বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতিদিন প্রায় ২৮ কোটি লিটার পানি সংগ্রহ পরবর্তী শোধনাগার থেকে চট্টগ্রাম নগরীর ৬০ লক্ষ নাগরিকের পানির সংস্থান করে আসছে।এছাড়াও চট্টগ্রাম ওয়াসা সুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে  চট্টগ্রামকে একটি  স্বাস্থ্যকর নগর গড়ে তোলার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পনাবিদ  সাইয়িদ ফুয়াদুল খলিল আল ফাহমি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং কর্ণফুলী নদী রক্ষায় তীরবর্তী ১০০ মিটার ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০ মিটারের মধ্যে কোন প্ল্যান অনুমোদন দেই না। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো আশিকুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ বিভিন্ন জনস্বাস্থ্যকর প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন,এই আলোচনা সভা থেকে সাম্প্রতিক নদী রক্ষা কমিশন দ্বারা জরিপকৃত ২৪০০ জন দখলদারের নাম প্রকাশের দাবি করছি। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন  নদী গবেষক ইদ্রিস আলী, পরিবেশ সংগঠক হাসান মারুফ রুমী,সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানা, সাবেক ক্লাইমেট এক্সপার্ট জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আর ডি আর সির ফেলো মনির হোসেন চৌধুরী,ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের আমিনুর রসুল, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মোনির হোসেন, নদী আধিকার মঞ্চের সদস্য সচিব শমশের আলি,রিভার বাংলার লেখক ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন,পরিবেশ সংগঠক হাসান মারুফ রুমী, সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানা, কর্ণফুলী সাম্পান মাঝি ফেডারেশনের সভাপতি পেয়ার আলী,  কর্ণফুলী সুরক্ষা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক শেখ দিদারুল ইসলাম,সাংবাদিক এম আর আমিন,সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক আমান উল্লাহ বাদসা প্রমূখ।

Loading