চার মাসে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধ করবে শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ৩:২৩ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ১৩, ২০২২

আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে বাংলাদেশের কাছ থেকে ধার নেয়া ২০০ কোটি ডলারের পুরাটো পরিশোধ করবে শ্রীলঙ্কা— এমন আশ্বাস দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল বীরা সিংহে। ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আশ্বাস দেন তিনি।

ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট আর দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না করেই বড় বড় অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সঙ্গে করোনার ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ে দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।

২০২১ সালে চরম সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে তিন দফায় শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়া হয়। মুদ্রাবিনিময় নীতি মেনে ঋণ পরিশোধের সময়ও বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু দেউলিয়া ঘোষণার পর শ্রীলঙ্কা থেকে ঋণের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

তবে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে এসে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, মাস চারেকের মধ্যেই শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে রিজার্ভের অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কাকে সোয়াপ অ্যারেঞ্জমেন্টের আওতায় তিন দফায় ২০০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রীলঙ্কা তাদের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তা সময়মতো ফেরত দিতে পারেনি। তাই আমরা দুই দফা টাকা ফেরত দেয়ার মেয়াদ বাড়িয়েছি এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে এ অর্থ তিন কিস্তিতে ফেরত দেয়ার কথা।

সংকট মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কা এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশ। গভর্নর জানান, আইএমএফের ঋণ ছাড় হলেই বাংলাদেশের অর্থ ফেরত দিতে শুরু করবে দেশটি।

আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, আইএমএফ থেকে যে শ্রীলঙ্কা একটি প্রোগ্রামে যাচ্ছে, সেটি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। তারা হয় তো নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে একটি চুক্তিতে যাবে।

এদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ সহায়তায় ঋণ দিতে আগ্রহ জানিয়েছে জেপিমর্গান ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান গভর্নর আবর রউফ তালুকদার।

শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ঋণ নিয়ে এত দিন যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেই অনিশ্চয়তার কালো মেঘ কাটতে শুরু করেছে। ওয়াশিংটনে দুই দেশের গভর্নরের বৈঠকের পর শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। তবে এখন দেখার বিষয় সে অর্থ কত দিনে ফেরত পায় বাংলাদেশ।

Loading