লাখো মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ , ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২

এ এক চোখ ধাঁধানো আয়োজন। একটি দুটি নয় এক লাখ মোমবাতি জ্বেলে নড়াইলবাসী স্মরণ করলেন একুশের অমর ভাষা শহীদদের। নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠ প্রাঙ্গনে ‘অন্ধকার থেকে ম্ক্তু করুক একুশের আলো’এই শ্লোগান নিয়ে প্রতিবছরের মত এবারও আয়োজন করে একুশ উদযাপন পর্ষদ।

এসময় মঞ্চে “আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”এই গান দিয়ে শুরু হয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনা গণসঙ্গীত ও কবিতা। নড়াইলবাসীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী উপভোগ করেন এই মনোহর দৃশ্য। তবে করোনার কারনে এ বছর দর্শনার্থী উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল।

ভাষা শহীদদের স্মরণে এবারের লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। এবার বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের দৃশ্য মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এ খবর সংশ্লিষ্ঠ সূত্রের।

একুশ ফেব্রুয়ারিতে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে নড়াইলবাসী অপেক্ষা করেন সন্ধ্যার মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের দৃশ্য দেখার জন্য। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ভিক্টোরিয়া কলেজের কুরিডোব মাঠ প্রাঙ্গনে আলোকিত হয়ে ওঠে। মোমবাতিগুলো জ্বলে ওঠে। ধীরে ধীরে আকার স্পষ্ট করে দেয় নানা বর্ণমালার, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, জাতীয় সংসদ ভবন, শাপলা ফুল আর বিভিন্ন আল্পনার। এর মধ্যেই মাঠের পাশে তৈরী করা মঞ্চে শুরু হয় ভাষার গান আর কবিতা আবৃত্তির। প্রায় দুই ঘন্টার এই অনুষ্ঠানের খবর আর এই জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে অনেকদুর।

একুশ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ৬ টা ১৫ মিনিটে প্রজ্জলন শুরু হয় মোমবাতি। অন্ধকার ছাপিয়ে বাহারি ডিজাইনের আলোয় আলোকিত হয়ে যায় বিশাল এই মাঠ। এই সাথে ভাষা দিবসের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ৭১টি ফানুষ ওড়ায়। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের দৃশ্য,শহীদ মিনার,জাতীয় স্মৃতি সৌধ, জাতীয় ফুল শাপলা, বাংলা বর্ণমালা, ও প্রজš§’৭১,যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, শিখা অনির্বাণ আল্পনা, করোনামুক্ত পৃথিবী, কলুশমুক্ত পৃথিবীসহ বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে মোমবাতি প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে।

আয়োজকরা আশা করছেন এবার এক লাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে দেশের বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বদের উপস্থিতি আর সংগীতশিল্পীদের অংশগ্রহনে প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য হবে অনুষ্ঠানটি। প্রতিবছরই আয়োজনে শ্লোগান থাকে ’ অন্ধকার থেকে মুক্ত করবে একুশের আলো’।

একুশে উদযাপন পর্ষদের আহব্বায়ক জানান,আমাদের জ্ঞানের যে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প, সমাজের কপমুন্ডুকতা – সামগ্রিক এসব অন্ধকারের বিরুদ্ধে একুশের আলো। এ আলো শুধু মাঠের আলো নয়। সামগ্রিক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার প্রত্যয় জাগানিয়া আলো।

Loading