ধর্ষণ মামলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে ৩ জনের সাক্ষ্য

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ , জানুয়ারি ২৫, ২০২২

ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টের নিরাপত্তা প্রহরী ইসমাইল হোসেন, রিসোর্টের এক্সিকিউটিভ মাহাবুবুর রহমান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু।

মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য দেন তারা।

এর আগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জে আনা হয় মামুনুল হককে।

রাষ্টপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ জানান, জান্নাত আরা ঝর্ণার করা ধর্ষণ মামলায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে তারা ঘটনার সময়ের নানা তথ্য তুলে ধরেছেন। আদালত তাদের সাক্ষ্য নথিভূক্ত করেছেন।

মামুনুল হকের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন জানান, আদালতে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা মামুনুল হককে ফাঁসাতে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরেছেন। আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার পর তাদের জেরা করেছি আমরা।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুপুরে আদালত এলাকা থেকে মামনুল হককে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে নেয়া হয়।

পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় তৃতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় আসামি মামুনুল হককে। আদালতের প্রবেশ ফটকে নিরাপত্তা জোরদারসহ বহিরাগতের প্রবেশের কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সাক্ষগ্রহণ শেষে মামুনুল হকে কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর মামুনুলের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন অফিসার নাজমুল ইসলাম অনিক ও নিরাপত্তা প্রহরী রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তারও আগে গত ২৪ নভেম্বর মামুনুল হকের উপস্থিতিতে তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা আদালতে জবানবন্দি নেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণার সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে এসে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন মামুনুল। শুরুতে তিনি ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করলেও পরে জানা যায় ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এরপর ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় মামুনুলের নামে ধর্ষণ মামলা করেন ঝর্ণা। এতে তিনি অভিযোগ করেন, মামুনুল বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন। বিয়ে করবেন বলে আর করেননি।

এই মামলার আগেই গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল। এরপর সহিংসতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। ঝর্ণার মামলার পর তাকে এই মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

ধর্ষণ মামলায় গত ৩ নভেম্বর মামুনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।

Loading