হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানা গেল তিন মাস পর

প্রকাশিত: ১২:২৩ অপরাহ্ণ , জানুয়ারি ১২, ২০২২

মৃত্যুর খবর জানান। জানা গেছে, তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মারা যান, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে। তিনি করোনাভাইরাস পজিটিভ ছিলেন বলেও জানা গেছে।

ফেসবুক পোস্টে নিজের ছবির সঙ্গে বড় ভাই হারিছ চৌধুরীর একটি ছবি যুক্ত করে ক্যাপশনে আশিক চৌধুরী লিখেছেন, ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। এরপরই কমেন্ট বক্সে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ অনেকে শোক প্রকাশ করেন।

আশিক চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি লন্ডনে করোনায় আক্রান্ত হন হারিছ চৌধুরী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরার কদিন পরই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তার। সাময়িকভাবে কিছুটা সুস্থ বোধ করলেও তার ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় একসময় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরের মাসেই অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত এ বিএনপি নেতা।

আশিক চৌধুরী আরও জানান, লন্ডন থেকে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে মন্নু চৌধুরী ফোনে মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে মারা গেলেও হারিছ চৌধুরীর পরিবার তার মৃত্যুর খবর গোপন রেখেছিল। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। সে সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

পালিয়ে যাওয়ার পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এ ছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সরে পড়েছিলেন।

কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামে করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন। সূত্র জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যও দেখভাল করতেন ওখানে থেকেই। হারিছ চৌধুরী স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার।

Loading