নিয়মিত অফিস না করলেও ছয় মাসের চুক্তি বাড়লো মেডিকেল অফিসারের

প্রকাশিত: ৮:৩৮ অপরাহ্ণ , নভেম্বর ২৫, ২০২১

আবারও চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাঃ অভিষেক বিশ্বাসের। গত ১৬ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো: মোরাদ হোসেন সাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, ডা. অভিষেক বিশ্বাসের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তার আবেদন ও উপাচার্যের পত্রাংশে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে তার চাকুরির মেয়াদ আগামী ৩১/৩/২০২২ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এই চিকিৎসক নিয়মিত মেডিকেল সেন্টারে উপস্থিত হন না। এর ফলে অনেকসময় গুরুতর অসুস্থ হলে মেডিকেল সেন্টারে গেলেও কোনো তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সজীবুল ইসলাম সজীব বলেন, “গতদিন পরীক্ষা শেষ করে আমি ও আমার এক বন্ধু চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যাই। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় আমরা চিকিৎসা সেবা পাইনি। এছাড়া শুধুমাত্র গতদিনই না ইতোপূর্বেও দুই দিন মেডিকেল সেন্টারে গিয়েও ডাক্তার পাইনি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী থাকে। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সে যদি প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাটুকুও না পায়, ডাক্তার না থাকে তাহলে এই মেডিকেল সেন্টারের কাজ কি?

এছাড়া, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানান, নিয়মিতভাবেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন অভিষেক বিশ্বাস। এমনকি সম্প্রতি গত ২২ নভেম্বর মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক না আসায় শিক্ষার্থী কর্তৃক অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি আবেদনপত্রও দিয়েছেন।

আবেদনপত্রে তারা দাবি করেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ মেডিকেল সেন্টারে নিয়মিত চিকিৎক না পাওয়ায় সেবা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীগণ মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করছে। এমনকি শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক না পাওয়ায় তাদের অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথাও বলেছে। এমতাবস্থায় তারা সেবা প্রদানের জন্য অফিসে অবস্থান করতে ঝুঁকিপূর্ন আশংকা করছেন।

নিয়মিত অফিস না করা প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে ডা. অভিষেক বিশ্বাস এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে এখানে আমি পর্যাপ্ত সেবা দিচ্ছি না তাহলে কর্তৃপক্ষ মেডিকেল সেন্টার অন্য কাউকে দিয়ে পরিচালনা করুক।

এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে ছয় মাসের নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড এ কিউ এম মাহবুব বলেন,তিনি ভালো সেবা দিচ্ছেন। শিক্ষক,কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পরিবারসহ তার ক্লিনিকে বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছেন।

ছাত্রদের সেবার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন , “১২০০০ শিক্ষার্থীর জন্য যেই সংখ্যক ডাক্তার প্রয়োজন তা নেই। সম্প্রতি আমি দুজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার বিজ্ঞাপ্তি দিয়েছি এবং চেষ্টা করছি দ্রুত দুজন চিকিৎসক নিয়োগ দিতে।”

এছাড়া তিনি এসময় সাংবাদিকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনারা লেখার আগে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করেন? কোন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে লেখার আগে রেজিস্ট্রার ভাইসচ্যান্সেলর এদের সাথে আলাপ করা উচিত।”

Loading