মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে সন্তান পরিবর্তনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২:৫৭ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ২৯, ২০২১

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে এক প্রসূতির নবজাতক (পুত্র সন্তান) পরিবর্তন করে (কন্যা সন্তান) প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধু ও তার স্বামীর অভিযোগ, তার পুত্র সন্তান জন্ম হলেও তাকে দেওয়া হয়েছে কন্যা সন্তান। গৃহবধূর পরিবার পুত্র সন্তানের দাবী জানিয়ে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) কুমুদিনী হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর কুমুদিনী হাসপাতালসহ এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূর নাম সুমাইয়া আক্তার (১৮) এবং তার স্বামীর নাম আরশাদুল ইসলাম । গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল এলাকায়। আজ শুক্রবার সুমাইয়ার স্বামী আরশাদুল, মামা আজিজুর রহমান এবং বোন শারমিন অভিযোগ করেন, গত ২৬ অক্টোবর সুমাইয়াকে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর কুমুদিনী হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করা হলে চিকিৎসক ডা. বপন কুমার তাদের জানায় পুত্র সন্তান হবে। কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তির পূর্বে মির্জাপুর হালিম আধুনিক হাসপাতাল (প্রাইভেট) চিকিৎসক ডা. তুলি পাল ও বাঁশতৈল ক্লিনিকের ডা. তারেক মাহমুদও আলট্রাসনোগ্রাম করে রিপোর্ট প্রদান করেন সুমাইয়ার পুত্র সন্তান হবে। গত বুধবার (২৭ অক্টোবর) কুমুদিনী হাসপাতালে সুমাইয়ার সিজারের মাধ্যমে পুত্র সন্তান হয় বলে হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয়। খুঁশির সংবাদে হাসপাতালের কর্মচারীদের মাঝে মিষ্টিও বিতরণ করা হয় বলে সুমাইয়ার পরিবার জানান। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আইসিও থেকে সুমাইয়ার পরিবারের কাছে পুত্র সন্তানের পরিবর্তে কন্যা সন্তান তুলে দেওয়া হয়। সুমাইয়া ও তার পরিবার এ ঘটনা মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় হাসপাতালে তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে কুমুদিনী হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় দেন দরবার হলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা থানায় একটি লিখত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালের এজিএম (অপারেশন) অনিমেশ ভৌমিক লিটন বলেন, হাসপাতালের সকল কাগজপত্রে সুমাইয়ার কন্যা সন্তান হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। সুমাইয়ার পরিবার ভুল সংবাদ শুনছেন যে তাদের পুত্র সন্তান হয়েছে। আসলে তাদের কন্যা সন্তানই হয়েছে। যেহেতু অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে সুমাইয়ার পরিবার ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সুমাইয়ার মামা আজিজুর রহমান ও বোন শারমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের পুত্র সন্তান হয়েছে এটা নিশ্চিত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের পুত্র সন্তান পরিবর্তন করে কন্যা সন্তান দিয়েছেন। তারা এটা কখনো মেনে নেবেন না। আমরা পুত্র সন্তানের দাবী জানিয়ে এবং কুমুদিনী হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের বাদী হয়েছে শারমিন আক্তার। আদালতের আশ্রয় নিয়ে প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করাবেন বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে এবং কুমুদিনী হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Loading