কারাগারে দ্বিগুণেরও বেশি মাদক মামলার আসামি

প্রকাশিত: ৫:৪৮ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ৭, ২০২১

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা যদি মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন,‘আমাদের জেলখানার ক্যাপাসিটি দিগুণের বেশি রয়েছে। এখানে যে আসামি রয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি মাদক মামলার আসামি।’

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্রের ‘ওয়েসিস’ উদ্বোধনকালে এই আহ্বান জানান তিনি।

কারও সন্তান মাদকাসক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আপনাদের সন্তান যখন মাদকাসক্ত হয় আপনারা তখন প্রকাশ করতে চান না। ভাবেন সমাজের মানুষ কি বলবে। যখন আপনার সন্তান মাদকাসক্ত হয়, তখন তাকে চিকিৎসার দোরগোড়ায় নিয়ে আসুন।’

তিনি বলেন, ‘যখন আপনার সন্তান মাদকাসক্ত হয় তখন তাকে চিকিৎসকের দোরগোড়ায় নিয়ে আসেন। যখন একটা ক্ষতি হয়ে যাবে, তখন কেঁদেও কুল পাবেন না। আমরা যদি ৮০ লাখ মাদকাসক্ত থেকে ৮ লাখেও আনতে পারি এটাও আমাদের একটা সফলতা বয়ে আনবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশ বাহিনীর প্রচেষ্টায় আমরা সফল হয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধেও প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সেই যুদ্ধেই আজ আমরা অবতীর্ণ। এ যুদ্ধে আমাদের জয় হতেই হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা রক্ষা করতে পারব না।’

এখন কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করেন না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তামাকের বিরুদ্ধে আমরা যে আন্দোলনটা করেছিলাম সেটা মনে হয় আমরা মোটামুটি সফল হয়েছি। এখন প্রকাশ্যে কেউ ধূমপান করে না, সেই দৃশ্যটাও আমরা দেখছি। তামাক যে ক্ষতিকর সেটা আমাদের জনগোষ্ঠী জেনে গিয়েছে। সে কারণে অনেকেই তামাক থেকে ফিরে সাধারণ জীবনযাপন করছে।’

‘মাদকের ডিমান্ড হ্রাস, সাপ্লাই হ্রাস এবং হার্ম হ্রাস এই তিন ধরনের কাজ করে থাকি। ডিমান্ড হ্রাসে এলাকার যারা জনপ্রতিনিধি আছেন তাদের কাছে আহ্বান রাখবো, আপনার সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন, জানান। এটা যদি আমরা কন্ট্রোল করতে না পারি, নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে। আমরা ২০৪১ যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সেখানে হোঁচট খাবো। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন।’

আইজিপির বক্তব্য উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের সবাইকে এখানে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদক থেকে সবাইকে বিরত রাখতে হবে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের জানাতে হবে। আইজি সাহেব বলেছেন, মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয় না। এমনকি ফেনসিডিলও আমরা তৈরি করতে দেই না।’

মাদকের ভয়াবহতার উদাহরণ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হেরোইন-ইয়াবার পরে আসছে ভয়ানক মাদক এলএসডি। এই এলএসডি যে কতটা ভয়ানক তা আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্র নিজের গলা নিজে কাটতে গিয়েছিল, সেই দৃশ্যও আপনারা দেখেছেন। আপনাদের ঐশীর কথাও মনে আছে।’

যারা মাদকাসক্ত হয়ে যান তাদের কি হবে? উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, অসমর্থিত হিসেবে আমাদের দেশে ৮০ লাখ লোক মাদকাসক্ত। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে আমাদের সরকারি একটি মাদক নিরাময় হাসপাতাল রয়েছে। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো আপনি নিজে একবার এই হাসপাতাল দেখতে যাবেন। আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এটা নিয়ন্ত্রণ করে। এই হাসপাতালে অনেক কিছু নেই, অনেক সমস্যা। তারপরেও হাসপাতালটি চলছে।

Loading