কলমাকান্দায় অপহরনের ১০ দিন পর উদ্ধার , ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী

মো: কবীর চৌধুরী, মো: কবীর চৌধুরী,

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি ( পূর্ব )

প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১

অপহরনের ১০ দিন পর ভারতীয় সীমান্তবর্তী লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত মাহবুব আলম বাবুকে (২৮) উদ্ধার করেছে কলমাকান্দা থানা পুলিশ।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশ প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা কৃষ্ণপুর গ্রামের আবু আসাদের পুত্র মাহবুব আলম বাবু কলমাকান্দা সদরে বাসা ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর এলাকার কেনু মিয়ার পুত্র মোশাররফ হোসেন (৩৫) ও তার বড় ভাই মোস্তফা (৪০), লেঙ্গুড়া এলাকার সোহেল মিয়া (৩৫), চত্রংপুর এলাকার গাজী মিয়ার পুত্র শান ওরফে কিবরিয়া (৩০)সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বাবুকে তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টা বাজার পরও বাবু বাসায় ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে বার বার ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়ায় তাকে খেঁাজাখুজি শুরু করে। ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে অপহরণ চক্রের জনৈক সদস্য মাহবুব আলম বাবুর হোয়াটস আপ নাম্বার থেকে স্ত্রী সুরমা আক্তারের হোয়াটস আপ নাম্বারে ফোন করে বলে বাবুকে ভারতে পাচার করে আটক রাখা হয়েছে। ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দেয়া না হলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে অপহরণকারীদের একজন আনোয়ার আর আরেকজন নিজেকে রফিক পরিচয় দিয়ে দুটি ভারতীয় মোবাইল থেকে ফোন করে পৃথক দৃটি একাউন্ট নাম্বারে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে বলে।

এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়া অপহৃত বাবুর মা রহিমা খাতুন বাদী হয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলমাকান্দা থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করে।

মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তকালে মনতলা গ্রামের ফরিদ মিয়ার পুত্র সন্ধিগ্ধ আসামী আল আমিনকে (৩২) আটক করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে আল আমিনকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় নাগরিক পরিচয়দানকারী আনোয়ার ও রফিক হোয়াটস আপ নাম্বারে পূনরায় ফোন করে মুক্তিপনের টাকা দাবী করে। পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সীর পরামর্শে ভিকটিমের পরিবার অপহরণকারীদের চাহিদা মোতাবেক মুক্তিপনের টাকা বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় প্রদানের আশ^াস প্রদান করেন। এ দিন রাত ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ ও নিবিড় তদারকিতে অতিরিক্ত পুলিম সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার দুর্গাপুর সার্কেল মাহমুদা শারমিন নেলী, কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ খানের সমন্বয়ে একটি চৌকষ টিম আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত মাহবুব আলম বাবুকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিপর্যস্থ বাবুকে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে বাবুকে আদালতে সোপর্দ করার পর বিচারকের নির্দেশে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ সুপার জানায়, অপহরনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Loading