হাজার কোটি টাকা উধাও

প্রকাশিত: ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ , সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১

রহিম শেখ ॥ বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ঘরে বসে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা বা ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর গোটা খাতটি এখন ভুগছে আস্থার সঙ্কটে। সম্প্রতি খুব অল্প সময়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতসহ গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে সরকারের অন্তত ৯ সংস্থা। এরমধ্যে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের দুটি ব্যাংক হিসাবের লেনদেন পর্যালোচনা করে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার হদিস পাননি মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। দুই এ্যাকাউন্টে এখন সব মিলিয়ে জমা আছে ৩ কোটি ১২ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৫ টাকা। আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির ২ লাখ গ্রাহকের পাওনা ৩১১ কোটি টাকা বলে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়া পণ্য সরবরাহ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক পাওনাদারের ২০০ কোটি টাকার মতো পাওনা রয়েছে। ইভ্যালি যেসব গ্রাহককে রিফান্ড চেক দিয়েছে, ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় সেগুলোও বাউন্স হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ইভ্যালির নথি চেয়ে বিভিন্ন সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদিকে ৬০০ ব্যবসায়ীকে ১০ দিনের মধ্যে মূল্য পরিশোধের কথা দিলেও ছয় মাসেও ২০০ কোটি টাকা ফেরত দেয়নি ধামাকা শপিং। এছাড়া দালাল প্লাস, আদিয়ান মার্ট, শ্রেষ্ঠ ডটকম, আলাদীনের প্রদীপ, কিউকম, ফাল্গুনী শপ এবং বুমবুমসহ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। সব মিলিয়ে গত দেড় বছরে এসব কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় হদিস নেই অন্তত এক হাজার কোটি টাকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিপুল ডিসকাউন্টের বিতর্কিত মডেলের ব্যবসা, ক্রেতার সচেতনতার অভাব, তদারকিতে ঘাটতিসহ নানা কারণ এ খাতে অস্থিরতার জন্য দায়ী।

জানা যায়, গত বছর করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে অনেক নতুন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এর মধ্যে কোন কোন প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যবসা ও পরিচিতির জন্য ব্যাপক ডিসকাউন্ট পদ্ধতিতে ব্যবসা করে। এসব কোম্পানির আকর্ষণীয় অফারে অনেক মানুষ পণ্য কিনতে আগাম টাকা দিয়েছেন। একশ্রেণীর ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে, যারা এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়ে পণ্য কিনে বিক্রির কাজ করছেন, আবার কেউ কেউ পণ্য না নিয়ে নগদ টাকা নিচ্ছেন। কিন্তু চাহিদার পণ্য বা টাকা না পেয়ে অনেকেই এখন দ্বারস্থ হয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা ১৩ হাজার ৩১৭টি অভিযোগ করেছেন। গত জুলাই-আগস্ট সময়ে অভিযোগ বেড়েছে আরও কয়েক হাজার। অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই নির্ধারিত সময়ের দুই থেকে ছয় মাস পরও পণ্য বুঝে না পাওয়া নিয়ে। এর বাইরে ‘চেক ডিজ অনার’ হওয়া, ‘রিফান্ডের’ টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মডেলের কারণে এ খাতে এক ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছ থেকে অনেক টাকা আগাম নিয়েছে। এখন চেষ্টা চলছে গ্রাহকের টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। যেসব প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কার্যক্রম করেছে তাদের সম্পদের হিসাব ও ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আগামীতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে আগাম পরিশোধ, সময়মতো পণ্য সরবরাহ, লেনদেন প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ই-কমার্সের প্রতি মানুষের আস্থা কমেছে। পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য ই-ক্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ২ শতাংশ মানুষ ই-কমার্সে কেনাকাটা করেন। ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ফেসবুক পেজ খুলে ব্যবসা করছে আরও ৫০ হাজার লোক। বর্তমানে অর্ডার সরবরাহ হচ্ছে দৈনিক গড়ে দুই লাখের বেশি। প্রচলিত ধারার বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স চালু করছে। ই-কমার্স খাতে স্থিতিশীলতার জন্য ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬টি কোম্পানিকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্রেতাকে সেবা দিতে না পারার কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে সংগঠনটি। গত সপ্তাহে ৪টি কোম্পানির সদস্যপদ বাতিল করেছে ই-ক্যাব। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ই-অরেঞ্জ ডট শপ, টোয়েন্টিফোর টিকেটিং ডট কম, গ্রীণ বাংলা ই-কমার্স লিমিটেড এবং এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এ্যাগ্রো ফুড এ্যান্ড কনজ্যুমার লিমিটেড। শিগগিরই আরও ৪/৫টি কোম্পানির সদস্যপদ বাতিল করবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

ই-অরেঞ্জের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে হাওয়া ৪৫০ কোটি টাকা ॥ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের ব্যাংক থেকে তুলে নেয়া টাকার একটি অংশ পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে গেলেও প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। দুই এ্যাকাউন্টে এখন সব মিলিয়ে জমা আছে ৩ কোটি ১২ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৫ টাকা। সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকে ই-অরেঞ্জের দুটি এ্যাকাউন্টের লেনদেন পর্যালোচনা করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের তেজগাঁও বিভাগ। গত এক বছরে সব মিলিয়ে ওই দুটি এ্যাকাউন্টে প্রায় এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। তবে এর প্রায় পুরোটাই তুলে নেয়া হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ই-অরেঞ্জের সিটি ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৬২০ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার ৭২৯ টাকা। আর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি হিসাবে জমা পড়ে ৩৯১ কোটি ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৯ টাকা। এই টাকার পুরোটাই গ্রাহকদের বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক গ্রাহকের করা মামলার তদন্ত করছেন গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, গ্রাহকদের ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে তিন আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছি। সব কিছু যাচাই-বাছাই করে আমরা শিগগিরই মামলাটির একটি সুরাহা করতে পাবর বলে আশা করছি। সেই সঙ্গে কে, কীভাবে কত টাকা আত্মসাত করল, সেটাও বের করতে পারব।

ইভ্যালির ২ লাখ গ্রাহকের পাওনা ৩১১ কোটি টাকা ॥ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির কাছে ২ লাখের বেশি গ্রাহকের ৩১১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। এর বাইরে পণ্য সরবরাহ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক পাওনাদারের ২০০ কোটি টাকার মতো পাওনা রয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা অনেক গ্রাহক এখনও পণ্য পাননি। ইভ্যালি যেসব গ্রাহককে রিফান্ড চেক দিয়েছে, ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় সেগুলোও বাউন্স হচ্ছে। এর আগে গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত ক্রেতাদের থেকে নেয়া অগ্রিম, পণ্য সরবরাহকারীদের পাওনা এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক বকেয়াসহ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটির মোট দায় ৫৪৩ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল।

এদিকে গত ২৬ আগস্ট ইভ্যালি এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের সব ব্যাংক এ্যাকাউন্টের হিসাব চেয়ে দেশের কার্যরত সকল ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইভ্যালি প্রতিষ্ঠান এবং এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও এমডি মোহাম্মদ রাসেলের ব্যাংক হিসাবের তথ্য আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে তাদের হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী, ৫০ লাখ টাকা বা তার বেশি জমা ও উত্তোলনের জমা রসিদ বা চেকের কপি (ওয়াক-ইন কাস্টমারের ছবিযুক্ত আইডিসহ) পাঠাতে হবে। এসব হিসাবের নমিনির তথ্য এবং নমিনিদের নামে কোন হিসাব থাকলে তাও জানাতে বলা হয়েছে। তাদের নামে এফডিআর, ঋণ হিসাব, এলসি থাকলে সব ধরনের কাগজপত্রসহ তথ্য দিতে হবে। হিসাব খোলার ফর্ম, কেওয়াইসি প্রোফাইল, লেনদেন বিবরণী ও এ সংশ্লিষ্ট সব ধরনের দলিল পাঠাতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএফআইইউর এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর আগে গত বছর ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব এক মাস জব্দ করে রাখে বিএফআইইউ। এদিকে গত বৃহস্পতিবার ইভ্যালি সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়ে বিভিন্ন সরকারী সংস্থার কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ইভ্যালির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধান টিম। এ বিষয়ে জানতে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেলকে ফোন দেয়া হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে রাসেল লিখেছেন, আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে গ্রাহকদের সব পণ্য ডেলিভারি দেয়া হবে। এছাড়া আজ শনিবার ফেসবুক লাইভে এসে গত এক মাসে প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম সম্পর্কে জানাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পণ্য সরবরাহকারীদের ২০০ কোটি টাকা দিচ্ছে না ধামাকা ডটকম ॥ ধামাকা ডটকম নামে একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পণ্য সরবরাহ করে বিপদে পড়েছেন প্রায় সাড়ে ৬০০ ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহকারীদের ১০ দিনের মধ্যে মূল্য পরিশোধের কথা দিলেও ছয় মাসেও টাকা দেয়নি। এ অবস্থায় পাওনা ২০০ কোটি টাকা আদায়ে সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন পণ্য সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা। তারা পাওনা আদায়ে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চুক্তি করে ধামাকা ডটকমকে পণ্য সরবরাহ করছেন তারা। চুক্তিতে পণ্য সরবরাহের ১০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা রয়েছে। কিন্তু ধামাকা কর্তৃপক্ষ চুক্তির শর্ত কখনোই মানেনি। গত মার্চ থেকে সরবরাহ করা পণ্যের মূল্য এখনও পাননি। বারবার পাওনার জন্য ধামাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা সময় নিচ্ছে বা এড়িয়ে যাচ্ছে। সরবরাহকারীদের এ অভিযোগ বিষয়ে জানতে ধামাকা ডটকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তাকে বারবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে ধামাকা ডটকমের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম রানা জনকণ্ঠকে বলেন, সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি সরাসরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেখভাল করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, মিটিং করছেন। সমস্যা হচ্ছে কোম্পানির ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা জব্দ করা হয়েছে। ফলে কোম্পানি চাইলেই লেনদেন করতে পারছে না। এ অবস্থায় ক্রেতাদের থেকে সরাসরি টাকা সংগ্রহ করে নেয়ার জন্য সরবরাহকারীদের বলা হয়েছে। এ ছাড়া কোন্ সরবরাহকারী কত টাকা পান তার ডকুমেন্ট নেয়া হচ্ছে। অবশ্যই তাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।

ই-কমার্স প্রতারণা রোধে কাজ করছে সরকারের ৯ সংস্থা ॥ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য বা সেবা বিক্রির নামে ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর নানামুখী প্রতারণা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। গ্রাহকের সঙ্গে ধোঁকাবাজি, হয়রানি, অর্থ আত্মসাত ও অর্থ পাচার রোধে একযোগে কাজ করছে সরকারের কমপক্ষে নয়টি দফতর। সেগুলো হচ্ছে- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এবং নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের প্রধান ও ডিআইজি মোহাম্মদ আবদুল্লাহেল বাকী বলেন, ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, আলাদীনের প্রদীপ, কিউকম, বুমবুমসহ অনলাইন ফ্ল্যাটফর্মে পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা, অর্থ আত্মসাত ও অর্থ পাচার নিয়ে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। আর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে কঠোরভাবে তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে সরকারের অন্যান্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমরা কাজ করছি।- জনকন্ঠ

Loading