মসজিদে মসজিদে ঘুরে জেলে বাওয়ালীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বশির

প্রকাশিত: ৭:১৮ অপরাহ্ণ , আগস্ট ১১, ২০২১
মহসিন উল হাকিম
জুলফু বাহিনীর কথা শুনলে এখনও কেঁপে ওঠে পূর্ব সুন্দরবন। সাগরের জেলেদের মনে এখনও দৃশ্যমান আতংকের আরেক নাম জুলফু। দস্যুনেতার নাম ছিলো জুলফিকার। বাড়ি মংলার জয়মনি।
বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যু হয় জুলফুর। এরপর তার ছোট ভাই মর্তুজার মৃত্যুও হয়েছে একই ভাবে। এই দুই দস্যু ভাই এর কবর পাশাপাশি দেয়া আছে, জয়মনিতে।
দুর্ধর্ষ দস্যু জুলফু আর মর্তুজার আপন মামা বশির। ছবিতেতে আমার পাশের ব্যক্তি তিনি। ভাগনের দস্যুদলের একজন সাধারণ সদস্য ছিলেন বশির। তবে দস্যুনেতার মামা হওয়ায় দাপট ছিলো বেশি।
জেলে বাওয়ালীদের ওপর বাড়তি অত্যাচার করার দুর্নাম ছিল বশিরের বিরুদ্ধে।
জুলফু বাহিনীর পতনের পর শুরু ফেরারি জীবন। কিছুদিন খুলনায় আত্মগোপনে ছিলেন। তারপর পালিয়ে ভারতে থেকেছেন বেশ কয়েক বছর। পরে আবারও দস্যুতায়। এভাবেই কেটে গেছে প্রায় এক যুগ। অপরাধের জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে ছেড়ে চলে গেছেন স্ত্রী, সন্তানেরাও দূরে সরে গেছে।
এরপর আত্মসমর্পণ, তারপর জামিনে মুক্ত হয়ে নিজের এলাকায় ফিরেছেন। তার অত্যাচারের শিকার জেলেরা প্রতিশোধ নিতে পারে, সেই শঙ্কা ছিলো মনে। তাই এলাকায় ফিরেই স্থানীয় মসজিদে মসজিদে গিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
তারপর আবারও জীবনযুদ্ধের শুরু। পঞ্চাশোর্ধ সাবেক এই দস্যুর জন্য সে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। তারপরও নতুন করে বেঁচে থাকা শুরু। একাকী জীবন। তারপরও চেষ্টা তো করতে হবে। জয়মনির ঠোঁটায় ছোট্ট করে নিজের একটা ঘর তুলেছেন। এখন পোণা মাছ আর কাঁকড়ার ব্যবসা করছেন একসময়ের বনদস্যু বশির…

Loading