একজন সফল উদ্যােক্তার গল্প

প্রকাশিত: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ , জুলাই ১৭, ২০২১

সাইদুর রহমান।

বেকার, হতাশাগ্রস্হ যুবকদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ফরিদ মিয়া। দেশের শত শত বেকারেরা চাকুরী নামক সোনার হরিণের পিছনে ঘুরে হতাশাগ্রস্হ হয়ে বেকার জীবনের সাথে বসবাস করতেছে অথবা বাবা ছেলের চাকরী জন্য টাকা দিতে গিয়ে সবচেয়ে ভালো জমিটা বিক্রি করেছেন কিন্তু তারপরও মিলে নাই সোনার হরিণটি।

বাবা হারা ফরিদ মিয়া (২৬) সংসারের ছোট ছেলে। বসতি নান্দাইল পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে পিতা< মৃত সোহবান মিয়া
পৈত্তিক সম্পত্তি বলতে তাদের বাড়ী ভিটা। বাবার অবর্তমানে সে দিশেহারা! উপার্জনের পথ খোঁজছিল সে। কিন্তু পড়ালেখার পাশাপাশি উপার্জন করার মতো কোন কাজ পাচ্ছিল সে। কিন্তু আর্থিক অনটন থাকে বাঘের থাবা মেরে বসেছে। ২০০৮ সাল থেকে ১০ পযর্ন্ত প্রতিবছর যুব উন্নয়নের অফিসারের দ্বারস্থ হন কিন্তু প্রতিবারই বয়সের ভেড়াজালে আটকে যায় তার প্রশিক্ষণের যোগ্যতা। অনেক কষ্ট করে, অভাবের সাথে বসতি করে, ২০১৩ আলিম পাশ করে ফরিদ মিয়া । আর্থিক অনটন পরিস্কার বলে দিল আর হবে না লেখাপড়া।পুলিশ সহ আর্মি, বিডিআর চাকরির জন্য মাঠ টু মাঠ দৌড়ঝাঁপ, ফলাফল শূন্য!

তার বয়স তখন অনুকূলে। দেখা হয় নান্দাইল উপজেলা যুব উন্নয়নের সহ অফিসার রতন চন্দ্র দাসের সাথে।তার পরামর্শে নান্দাইল থেকে ময়মনসিংহে গবাদিপশু প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে সে। প্রথম স্হান অধিকার অর্জন করে প্রশিক্ষণ শেষ করে।

আর্থিক সমস্যার কারনে অ – নে- ক চেষ্টার পর একটা গরু কিনে সে। সেটা বিক্রি করে দুইটা গরু আনে, সাথে পশু চিকিৎসক হিসাবে পশুর চিকিৎসা করায়। তার সততা আর কর্মদক্ষতায় অল্প সময়েই গ্রাম টু গ্রাম তার নাম ছড়িয়ে যায়।।

অভাব এবং বেকারত্বকে গলাধাক্কা দিয়ে নিজের ভিটাতেই গড়ে তুলেন ” আল্লাহ ভরসা ক্যাটল ফার্ম “। তিনি ফার্মেসি, গরু ফার্ম এবং গরু চিকিৎসা করে প্রতি মাসে ইনকাম করেন ৬০- ৭০ হাজার টাকা। ২০১৩ সালের শেষের দিকে প্রাথমিক পুঁজি ৩০- ৪০ হাজার টাকা দিয়ে গবাদিপশু পালন এবং চিকিৎসক যাত্রা শুরু করেন।

এখন সে স্বাবলম্বী একজন যুবক। বর্তমানে ফার্মে ১৫ টা গরু আছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬ থেকে ১৭ লাখ টাকা । তাছাড়া বাজারে ভেটেরিনারি ফার্মেসিও আছে। নতুন করে গড়ে তুলেছে কবুতরের ফার্ম এখানেও সফলতার হাতছানি। ফরিদ মিয়ার সঠিক সিদ্বান্ত, কঠোর পরিশ্রম, হার না মানার অদম্য ইচ্ছা শক্তি, আজ সে দেশের হাজারও বেকার যুবকদের দৃষ্টান্তরূপ। সরকারী সহায়তা পেলে ফার্মটাকে বড় করতে চায়। তার লক্ষ্য বলতে আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ৫০ – ৬০ গরুর মালিক হবেন।

” উদ্যােক্তায় কমবে বেকারত্ব ”
আমার লেখা পড়ে যদি একজন যুবকও উদ্যােক্তা হন তাহলে, আমার কষ্ট হবে সার্থক।
ফরিদ মিয়া স্বেচ্ছাসেবী, রক্তদান সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত এবং নান্দাইল প্রেসক্লাবের সদস্য।

Loading