মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রোজিনা আমার বোন… নিউজ ৭১ অনলাইন নিউজ ৭১ অনলাইন প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ , মে ১৮, ২০২১ রিয়াজ হায়দার চৌধুরীরোজিনা আমার বোন । সরকারি আমলাদের একটি অংশের ভাষায় প্রথম আলো’র রোজিনা ইসলাম যদি রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র/দলিলপত্র ‘চুরি’ করেও থাকেন , তবে তার বুকে একজন অতিরিক্ত সচিবের ( কাজী জেবুন্নেছা) এমন করে হাত রাখার, গলা টিপে ধরার অধিকার কে দিয়েছে ?রোজিনা আমার বোন। তিনি যদি সাংবাদিকতার স্বার্থে কোন কাগজ নিজ আয়ত্বে নিয়েও থাকেন, তবে তাকে ৬ ঘন্টা জিম্মি করে মানসিক অত্যাচার করার অধিকার কে কাকে দিয়েছে ?মহামান্য আমলাগণ, রোজিনা দোষী হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতেন। আপনাদের ভাষায় রোজিনা যদি মন্ত্রণালয়ের জরুরি কাগজ নিজ আয়ত্বে নিয়েও থাকেন, তবে তা উদ্ধারে প্রতিনিধিত্বশীল সিনিয়র সাংবাদিক বা নেতৃবৃন্দকে উপস্হিত সাক্ষী রেখেই তা উদ্ধার প্রক্রিয়া চালাতে পারতেন। তাতে যদি রোজিনা দোষী হন, তবে আমাদের বলার কিছু নেই।কিন্তু তা না করে একজন সাংবাদিকের সাথে এমন অশোভন আচরণ স্বাধীন বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর পরে এসেও, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে কিংবা সভ্য রাষ্ট্রে কতটুকু কাম্য ? ঘটনাটি ঘটলো এমন একটি দিন, যেদিনে সারাদেশের মানুষ পিতা-মাতা ভাই ভাতৃবধূ হারা একজন ভূমি কন্যা, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৪০ বছর উদযাপন করেছেন ! তবে এর পেছনে কি অন্য কোন ষড়যন্ত্র আছে ?অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ইতিহাসে রোজিনা একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, লুণ্ঠন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক আলোচিত রিপোর্ট করেছেন তিনি। কাজেই তাকে সচিবালয়ের দায়িত্বশীলদের না চিনবার কথাও নয় ।অথচ রোজিনার বড় ভাই মোহাম্মাদ সেলিম যে তথ্য জানালেন তা উদ্বেগের, নিন্দা ও ঘৃণার। সেলিমের উদ্ধৃতি দিয়ে শাহবাগ থানা থেকে সাংবাদিক তারেক সিকদার জানান, “থানায় কথা হলে সেলিমকে রোজিনা বলেছেন, সচিবালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। বুকের ওপর পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছা। উপস্থিত পুলিশ কনস্টেবল হুমকি দিয়েছে মেরে ফেলার।’ রোজিনার পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়ে সেলিম বলেন, হাসপাতালের কথা বলে সচিবালয় থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতে থানায় রাখা হবে। সকালে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। তার ( রোজিনার) শারিরীক অবস্থা ভালো না। হাত পায়ে জখমের চিন্হ রয়েছে। নির্যাতনকারিদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি ।”এদিকে , রোজিনার গায়ে হাত তোলা ও নির্যাতনকারি ওই অতিরিক্ত সচিব সম্পর্কে ঢাকায় একাধারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করা বন্ধু সাংবাদিক লাকমিনা জেসমিন সোমা জানালেন, “উনি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাকি গুন্ডা? জনগণের টাকায় সরকারি পদে বসে জনগণের সেবা করতে এসেছেন নাকি মাস্তানি করতে এসেছেন? কোন্ আইনে কোন্ অধিকারে ‘কাজী জেবুন্নেসা বেগম’ এভাবে একজন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরতে পারেন, জানতে চাই। পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় বেআইনিভাবে সাংবাদিককে নির্যাতনের অপরাধে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এই মহিলা নাকি গার্লস গাইড এ্যসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার! ছিঃ! এই তার শিক্ষা! ”রোজিনা ইসলামের প্রতি এমন বর্বর ঘটনা সংবাদ মাধ্যম সদস্য দের নিরাপত্তাহীনতা, দেশের বড় বড় সংবাদ মাধ্যমে অধিকার চর্চা নিরাপত্তা সহ ট্রেড ইউনিয়ন আবশ্যিকতাসহ অনেক বিষয়কেও সামনে নিয়ে আসে ।লুটেরাদের বলছি, হ্যাঁ আপনারা / স্বাস্হ্য খাতের লুটেরারা, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকারকে কিংবা পুরো বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন না তো?একজন সাংবাদিকের প্রতি, একজন নারীর প্রতি, একজন মায়ের প্রতি, আমার একজন বোনের প্রতি , একজন অনুসন্ধানী প্রতিবেদকের প্রতি এমন অবিচার এর নিন্দা জানাই ।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। -রিয়াজ হায়দার চৌধুরী(রিয়াজ হায়দার চৌধুরী: সহ সভাপতি, বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাবেক সভাপতি / সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন- সিইউজে ) শেয়ার অতিথি কলামবিষয়: