আমার প্রাইমারি জীবন

প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ , নভেম্বর ২০, ২০২০

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই ?
আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের সকলের দোয়াতে ভালো আছি।

আমার ছোট বেলা মানে আমার শৈশব কাল কেটেছিল ঢাকাতে, কিন্তু আমার জন্ম হয়েছিল কুমিল্লা আমার নানা বাড়িতে। আমি বাবা মায়ের বড় মেয়ে ছিলাম ,, তখনো পর্যন্ত নানা বাড়ির বংশের ও কোন সন্তান ছিলো না সেই সুবাদে সকলের আদরের রাজকন্যা আমিই ছিলাম। আমার আব্বা সৌদি আরব থাকতেন, আমার আম্মা আমাদের নিয়ে ঢাকাতে আমাদের নিজ বাসায় থাকতেন।

আমার জীবনের প্রথম কিন্ডারগার্টেন স্কুল ছিলো কনকর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। সেই স্কুল টা জমি জটিলতার কারণে বন্ধ হয়ে যায়। তৃতীয় শ্রেনীতে পড়া অবস্থা তে ভর্তি হই আশকোনার দি আইডিয়াল একাডেমি নামে আরেকটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। সেই স্কুলেই আমার প্রাইমারি জীবন সমাপ্ত করি।

প্রাইমারি লাইফ শেষ করে ভর্তি হয়েছিলাম সিভিল এভিয়েশন স্কুল নামে একটি নাম করা স্কুলে। যদিও এই স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করার পর সেই স্কুলে ভর্তি হবার অনুমতি পেয়েছিলাম। অনেক আশা নিয়ে এই স্কুলে ভর্তি হই কিন্তু আব্বা বাহিরে থাকার কারণে সেই দিন আমাদের তিন বোন কে নিয়ে আম্মা নিজেকে নিরুপায় মনে করতো। সেই দিন কার সময় এখন কার মতো এতোটা সহজ ছিলো না। সমাজের মানুষের মধ্যে কুসংস্কার এ ভরপুর ছিলো, তাই আমাদের সবার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিজ বাড়ি ভাড়া দিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে চলে আসেন। যখন আমরা গ্রামের বাড়িতে চলে আসি তখন আমার স্বপ্নের সিভিল এ এভিয়েশন এ আমি সপ্তম শ্রেনীতে উর্ত্তিন্ন হবার ঠিক আগ মুহুর্তে। তারপর আমার হাইস্কুল জীবন থেকে কলেজ জীবন কুমিল্লাতেই পার করেছি। আপনাদের সাথে সেই জীবন গুলোর কথাও শেয়ার করবো।

আমাদের নিজ বাড়ি থেকে সিভিল এভিয়েশন এ রেলপথ হেটে যেতে হতো, আমাদের স্কুলে নিয়ে যেতেন আমার আম্মা কতটা না কষ্ট করেছে এখন বুঝতে পারি। তবুও আমার আম্মা স্বপ্ন দেখতেন তার তিন মেয়েই তার তিন ছেলের মতো অনেক বড় হবে। ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছে আমাদের কোন অভাব কোন দিন বুঝতে ও দেয় নাই।

নতুন এয়ারপোর্ট এর খুবই কাছাকাছি রাস্তা দিয়ে আমরা প্রতিদিন স্কুলে যেতাম, যখন আকাশে বিমান উড়তো তখন আম্মা আমাদের দেখিয়ে বলতো আমরা ভালো করে লেখাপড়া করে বড় হলে আমরাও  করে বিদেশ যেতে পারবো আর বড় ডাক্তার ও হতে পারবো। আম্মার কথা শুনে মনে মনে স্বপ্ন দেখতাম বিদেশে যাবার ডাক্তার হবার, যদিও শেষ মুহূর্তে ছোট একজন কমিউনিটি ডাক্তার হয়েছিলাম তবুও আমি খুশি। বিমানে চড়ার স্বপ্ন ইনশাআল্লাহ একদিন আমারও পূরণ হবে। আমার মেঝ বোন আর আম্মার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে, এখন আমি আর আমার ছোট বোন বাকি।

ছোটবেলায় অনেক বন্ধু ছিলো যাদের কখনো ভুলে যাওয়ার মতো নয় কালের ক্রমে তাদের একজনকে খুজে পেয়েছি বাকিদের আজও খুজে বেড়াচ্ছি। তাদের মধ্যে জুথী,তিন্নি,শবনম, সাগর, সাজ্জাদ, রবিন,সুজন তাদের নাম বেশি মনে আছে।

আমাদের গ্রামে যাওয়ার একমাত্র প্রধান কারন ছিলো মেয়েদের নিরাপত্তা, বর্তমান দিন গুলোর মতো যদি মেয়েরা এতোটা সাহসী হতো তাহলে হয়তো আমার আম্মাও আমাদের কে নিয়ে শহরেই দিনগুলো কাটাতে পারতেন।
আমরা নারী আমরাই পারি, এই কথাটা যেন সফল হয় আমি আমার মন থেকে দোয়া করি। ইনশাআল্লাহ সামনের দিন গুলো মেয়েরা আরও অনেক অধিকার পাবে। মেয়েরা এখন আর অসহায় না, তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করতে শিখে গেছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ি তখন তোলা এই ছবিটি খুজে পেলাম।

আমি খাদিজা মুন্নাফ চট্টগ্রাম থেকে ক্যামিকেল মুক্ত, লবণ মুক্ত আর টাটকা শুটকি মাছ এবং খাটি নারিকেল তেল নিয়ে কাজ করছি।
আমার সিগনেচার প্রোডাক্ট হাতে তৈরি খাটি নারিকেল তেল আর বালাচাও শুটকি। যারা কিটো ডায়েট করছেন তাদের জন্য কোল্ড প্রোসেস নারিকেল তেল তো আছেই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন ধন্যবাদ সবাইকে। স্বত্বাধিকারী -সিদল ## Khadija Munnaf  এর ফেসবুক দেওয়াল থেকে নেয়া ।

Loading