আলেম সমাজের কাছে তথ্য সহায়তা চেয়েছে প্রশাসন

প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ৩১, ২০২০

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আলেম সমাজের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন বৈঠক করেছে। বৈঠকে উপজেলার ইমাম মুয়াজ্জিনসহ পাঁচ শতাধিক আলেম উপস্থিত ছিলেন।

শহিদুন্নবী হত্যার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। এজন্য গুজব না ছড়িয়ে তদন্ত সংস্থা ও প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য আলেম সমাজের প্রতি আহ্বান জানান প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের শহীদ আফজাল হল কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে গত ২৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
বৈঠকে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর, পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানা, পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহার, পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে র‍্যাবের পক্ষ থেকেও ছায়া তদন্ত করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দেবদাস ভট্টাচার্য্ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হচ্ছে এবং কিছু আসামিকে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদেরও শনাক্তের কাজ চলছে। এ ঘটনায় যারা যতটুকু অপরাধী তাদের ততটুকু শাস্তির আওতায় আনা হবে। বাহিরাগত বা বিশেষ কোনো দলের লোক সম্পৃক্ত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনাক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় দোষীরা কেউ ছাড় পাবে না। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন- ‘তিনি উপস্থিতদের অনেককেই চিনেন না’। সুতরাং এসব বহিরাগত কারা এবং কীভাবে এসেছেন সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা ছিল না। স্থানীয়রা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

Loading