আলামতও নষ্ট করতে চেয়েছিল আসামিরা

প্রকাশিত: ৮:৩২ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ৩, ২০২০

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে প্রাইভেটকারের ভেতরে গৃহবধূকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে সাইফুর ও অর্জুনসহ চারজন। পরে গণধর্ষণের আলামত নষ্ট করতে গাড়িটি আটকে রেখেছিল অভিযুক্তরা। পরে পুলিশ আসার খবর পেয়ে পালিয়ে যায় তারা। শুক্রবার (০২ অক্টোবর) রাতে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর।

সেখানে তারা বলেছেন, ছাত্রাবাসের ফটকে দাঁড়িয়ে যখন কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা করছিল পুলিশের একটি দল। তখন গাড়িটি ধুয়ে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। তবে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল রানা এ সময় ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়ায় তা করতে পারেনি অভিযুক্তরা।

সাইফুর ও অর্জুন জবানবন্দিতে জানায়, তারা দুজনসহ মোট চারজন গৃহবধূকে ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরে প্রাইভেটকারের ভেতরে চারবার ধর্ষণ করে। রবিউল ইসলাম ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে। মোটরসাইকেল দিয়ে দুজন তাদের ছাত্রাবাসে পৌঁছে দেয়। তবে রবিউল ধর্ষণ করেনি। পরে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে বিদায় করে ধর্ষণকাণ্ড আড়াল করতে গাড়ি থেকে ধর্ষণের আলামত মুছতে চেয়েছিল তারা।

সূত্র জানায়, প্রায় তিন ঘণ্টা জবানবন্দি দেয় সাইফুর। প্রাইভেটকারটি টিলাগড় মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিল, সেখান থেকে তারেক কারটি চালিয়ে ছাত্রাবাসে নিয়ে আসে। এ সময় সাইফুর ও অর্জুন গাড়িতে ছিল। পরে মোটরসাইকেল চালিয়ে শাহ রনি তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। গাড়িতে তারা তরুণীকে নিয়ে নানা রকম খিস্তি করেন। গাড়িটি নিয়ে তারা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ১০৫ নম্বর কক্ষের সামনে আসে। স্বামীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সেখানেই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। ১০৫ নম্বর কক্ষটি মাহফুজুর রহমানের (এজাহারে ৬ নম্বর আসামি) নামে বরাদ্দ থাকলেও কক্ষটি ব্যবহার করতেন সাইফুর।

এদিকে শনিবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে গণধর্ষণের মামলায় আরও তিন আসামিকে রিমান্ড শেষে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুল ইসলামের আদালতে নেয়া হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনউদ্দিন।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, এর আগে গ্রেফতার ছয়জনের ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছে। শনিবার এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামির নমুনা নেয়া হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা নাগাদ কলেজের ফটকের সামনে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণী ও তার স্বামীকে জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে একদল তরুণ। এ ঘটনায় সেদিন রাতেই ধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে সিলেটের শাহপরাণ থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত তিনজনকে সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

Loading