বান্দরবানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিক নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভা

প্রকাশিত: ৬:৩৬ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ২০, ২০২৪

বান্দরবান প্রতিনিধি,

বান্দরবানে সম্প্রতি রুমা ও থানচি দুই উপজেলার ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, মারধর ও অপহরণ মত ন্যক্কারজনক ঘটনায় পাহাড়ে বিচ্ছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ কর্তৃক এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সাথে যারা জড়িত রয়েছে। এসব সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে পাহাড়ে বসবাসরত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়।

এসময় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে আয়োজনে জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা এসব কথা মন্তব্য করেন সমাজের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে জনপ্রতিনিধিগণ ও সচেতন নেতৃবৃন্দরা। প্রায় ৪ ঘন্টায় ব্যাপী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা “র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বসবাসরত মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, খুমী, বম, চাক, খেয়াংসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর কার্বারী, হেডম্যান, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, তারা (কেএনএফ) রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম এই উপজেলাগুলো নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করেছে আসছে। বিশেষ করে কয়েকজন বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, ম্রো ও খুমি নিয়ে গঠিত তাদের সংগঠন পক্ষ থেকে আত্মপ্রকাশ করে। সম্প্রতি সময়ে কিছু সংখ্যক বিপদগামী কেএনএফ’র সদস্য ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড গুলো চালাচ্ছে। এসব কর্মকান্ডে সাথে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীরা জড়িত নয় বলে দাবি তুলেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নেতারা।

তারা বলেন, বম জনগোষ্ঠীর নিয়ে গঠিত সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ’র বলে পরিচিত হলেও সমাজের জঘন্য এসব কাজে সাথে বম জনগোষ্ঠীর সকলেই জড়িত নয়। তাদের মধ্যে কিছু চক্রকারী নিজেদের ব্যক্তিগত হাসিলে উদ্দেশ্য জন্য সমাজে বসবাসরত নিরিহ বম জাতির কষ্ট পাচ্ছে। তাছাড়া বম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীরাও ক্ষতিগ্রহ হচ্ছে। সরকারে লুট হাওয়া অস্ত্রগুলো ফেরত দিয়ে এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছেড়ে শান্তির পথে ফেরার অহবান জানান বক্তরা।

বম সোস্যাল কাউন্সিলের সভাপতি রেভাঃ লালজার লম বম বলেন, সভায় কোন কোন পাড়ার থেকে বম সম্প্রদায়ের কার্বারী, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপস্থিত নেই। সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও নিরাপদ বোধ না করার কারনে তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন নি। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠনের পর থেকে বম সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্থ ৯৬৮ পরিবারকে পূর্ণবাসন ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, কোন অস্ত্রধারী গ্রুপের সাথে সকল বম সম্প্রদায় জড়িত নয়। তাদের কয়েকজনে জন্য সকল বম জাতিগোষ্ঠী দূষিত ও ক্ষতিগ্রহস্থ না হয়। তাই আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও নিজস্ব চর্চা ধরে রাখার জন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতি অনুরোধ করছি।

মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথি ক্যশৈহ্লা বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ করেই পার্বত্য এলাকায় রাষ্ট্র বিরোধী সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি পাহাড়ে জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশয় দিচ্ছে। এসব কর্মকান্ডে পাশের রাষ্ট্র ভারতে মিজোরাম আশ্রয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, কেএনফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই ভয়ে মিজোরামে পালিয়ে গেছে। আজকে সভায় মুক্ত আলোচনায় মাধ্যমে অনেকে তাদের মতামত পেশ করেছেন, আগামীতে আপনাদের প্রস্তাব নিয়ে কমিটি সদস্যরা বসে নতুন ভাবে সিদ্ধান্ত নেবো।

Loading