১৫৭ বিদেশি বন্দীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ৬:০৯ অপরাহ্ণ , ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪

সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বাংলাদেশের কারাগারে থাকা ১৫৭ বিদেশি বন্দীকে মুক্তি দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

গত ২১ জানুয়ারির প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের কারাগারগুলোতে বিভিন্ন অপরাধের সাজা শেষে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের ও একজন করে পাকিস্তান ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন। ১৫৭ জনের মধ্যে ১৯ জনের মতো নারী।

উচ্চ আদালতের আদেশের পর কারা অধিদপ্তরের পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

পরবর্তী শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনে প্রতিবেদনটি হলফনামা করে দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেফতার আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। ওই দিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তার নামে মামলা করে বিজিবি। তদন্তের পর একই বছর ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বিচার শেষে মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান দোষ স্বীকার ও অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে ২ মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। তাই তার প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তার প্রত্যাবাসনে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিট পিটিশনে।

গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজাভোগ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন উচ্চ আদালত।

কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়। এরপর আদালতে দাখিলের জন্য এটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর।

Loading