আশুলিয়ায় বন্ধুর ছলনায় অপহরণের পর হত্যা, ১০ দিন পর কলেজছাত্র হৃদয়ের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ , মে ১৮, ২০২৩

আশুলিয়ার জামগড়ায় অপহরণের ১০ দিন পর পুকুরে মিলল কলেজছাত্র ফারাবি আহমেদ হৃদয়ের বস্তাবন্দী মরদেহ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়ার শ্রীপুর মোজার মিল এলাকার শিববাড়ি ইস্টার্ন হাউজিং জলাশয় থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ।

লাশ উদ্ধারের পর সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুর রহমান বলেন, ‘র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও জড়িত একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম আমরা প্রকাশ করছি না। হত্যাকাণ্ডে হৃদয়ের বন্ধুরাই জড়িত। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করত। হৃদয়ের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ায় তারা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।

নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ঘটনার পরে ১১ মে আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে নিহতের পরিবার।

অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে না পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তাকে। পরে জলাশয়ে লাশ ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামির মধ্যে একজন হলেন ময়েজ হোসেন পরাণ (২২)। তিনি মানিকগঞ্জের সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে।

বর্তমানে আশুলিয়ার জামগড়ায় ভাড়া থাকেন এবং স্থানীয় ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপরজন হলেন সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫)। তিনি বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের মো. তাহেরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে আশুলিয়ার শ্রীপুরে বসবাস করছেন। পেশায় নির্মাণশ্রমিক। তাঁকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৪। এ ঘটনায় আজ রাজধানীর মিরপুর থেকে আকাশ নামে আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আকাশ পেশায় পোশাকশ্রমিক।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, হৃদয়ের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। হৃদয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। নিখোঁজের দিন ৮ মে জামগড়া এলাকার একটি বাসায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় হৃদয়কে। পরে জামগড়া থেকে নিয়ে শ্রীপুর এলাকার একটি পুকুরে তার লাশ ফেলে দেয়।

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

Loading