জনপ্রিয় এখন সিনথেটিক ড্রাগ

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ , আগস্ট ২, ২০২২

লাতিন অ্যামেরিকার মাদক চোরাকারবারি গোষ্ঠীগুলোর কাছে এখন কোকেন, গাঁজার চেয়ে সিনথেটিক মাদক বেশি আয়ের উৎস৷ এইসব মাদক সেবনে মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশের মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে৷

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেআর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে ভেজাল কোকেন সেবন করে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন অনেকে৷ তাদের মধ্যে মারা যান ২৪ জন৷ পরবর্তীতে আর্জেন্টিনা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে আবেদন জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে৷ সাম্প্রতিক সময়ে কেনা কোকেন কেউ যাতে কোনভাবেই সেবন না করে সেই আহ্বান জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে৷ কেননা পরীক্ষায় সেই কোকেনে কারফেন্টানিল নামের মারাত্মক রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায়৷

কারফেন্টানিল শক্তিশালী সিনথেটিক অপিওড ফেন্টানিল থেকে তৈরি হয় ৷ সাধারণত হাতির মতো বৃহৎ বন্যপ্রাণী অচেতন করতে এই রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়৷ এজন্য মাত্র দুই মিলিগ্রাম মাত্রা প্রয়োগ করলেই চলে, যা একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট৷

হেরোইনের সঙ্গে তুলনা করলে ফেন্টানিল ৫০ গুণ আর মরফিনের তুলনায় শতগুণ বেশি শক্তিশালী৷ সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকোর মাদক চোরাকারবারীদের জন্য আয়ের বড় উৎস হয়ে উঠেছে এই সিনথেটিক ড্রাগটি৷

স্বল্পব্যয়েঅধিকমুনাফা

প্রচলিত মাদকের চেয়ে এটি উৎপাদনে খরচ কম পড়ে৷ মেক্সিকোর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির কুখ্যাত মাদক চোরকারবারি গোষ্ঠী সিনালোয়া কোকেন, গাঁজা বা অন্য যেকোন মাদকের চেয়ে এখন ফেন্টানিল থেকে বেশি আয় করে৷

জুলাইতে মেক্সিকোর সেনারা দেশটির কুলিয়াকান শহর থেকে ৫৪৩ কিলোগ্রাম ফেন্টানিল জব্দ করে৷ এটি এই মাদকের জব্দকৃত সবচেয়ে বড় চালান বলে অভিযান শেষে সরকার থেকে বলা হয়৷

এর আগে মে মাসে সরকারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মাদকের দ্রুত বিস্তারের কারণ তুলে ধরা হয়েছিল৷ জননিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা রিকার্ডো মেহিয়া সেসময় গণমাধ্যমকে জানান, এক কিলোগ্রাম ফেন্টানিল তৈরিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে৷ মেক্সিকোতে যার গড়পতা দাম পাঁচ হাজার ডলার৷ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে তা বিক্রি হয় দুই লাখ ডলারে৷

মেক্সিকো: মাদকেরআকর্ষণীয়বাজার

মেক্সিকোয় উৎপাদিত সিনথ্যাটিক ড্রাগের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র৷ ২০২১ সালে অপিওয়েড সেবনে দেশটিতে লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ ১৩ জুলাই ওয়াশিংটনে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বৈঠকেও তাই বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে৷ মানুয়েল লোপেজ ওবরাডোর এবং জো বাইডেন দুইজনই সিনথেটিক ড্রাগের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার ও অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত হয়েছেন৷

অন্যদিকে মেক্সিকো নিজেও এখন লাতিন অ্যামেরিকায় মাদকের ট্রানজিট বা উৎপাদক দেশে সীমাবদ্ধ নেই৷ সেখানেওক্রমশ মাদকের ব্যবহার ও বেচাকেনা বেড়ে চলেছে৷ যার প্রমাণ মেলে হাসপাতালের রোগীদের তথ্যে৷ ২০১৩ থেকে ২০২০ সালে সিনথেটিক ড্রাগের কারণে চিকিৎসা নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা দেশটিতে চারগুণের বেশি বেড়েছে৷ – DW

Loading