কবি রাশিদুল রাশেদের চারটি কবিতা নিউজ৭১অনলাইন,ঢাকা নিউজ৭১অনলাইন,ঢাকা প্রকাশিত: ১২:২১ পূর্বাহ্ণ , জুন ১১, ২০২০ (১) অশ্রুহীন কান্না আঁখির টলমল অশ্রু ঝরছিল তখনো! কিন্তু কেউ দেখতে পারেনি। পারবেইবা কিভাবে? সে তো ছিলো পুরুষ! আর পুরুষ মানুষের কান্নার জল কপোলে জড়ায় না! পৃথিবীর সব পুরুষই নিরবে নিভৃতে কেঁদে থাকে! রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে তার হৃদয় কুঠিরে, কিন্তু এ কান্নার যেমন কোন শব্দ নেই, নেই তেমনি আঁখিতে টলমল অশ্রু! আসলে পৃথিবীর সব পুরুষ এভাবেই কান্না করে, এমনকি মহাপুরুষেরাও এমনই করেই কান্না করে! টলমল অশ্রু মাখা কান্নাতে তো কোন পুরুষের শোভা নেই, হয়তোবা তাই টলমল অশ্রুতে কান্না অভ্যস্ত নয় পুরুষ! টলমল অশ্রু ঝরানো কান্না বেশী পরিশ্রম নয়, বরং টলমল অশ্রুহীন কান্নাই অনেক পরিশ্রমের! যে পরিশ্রম একমাত্র পুরুষরাই বেশি করতে জানে ! (২) সত্য পূজার অভ্যাস অক্সিজেনের মতো নিজেকে বিলিয়ে,আগ্নেয়গিরির মতো সারা দুনিয়াকে জ্বালিয়ে, তেপান্তরের মাঠে খোঁজে নিতে চাই তোমাকে। আমাকে যখন পরিস্থিতি বানিয়েছে খোজাপ্রহরী, তখন অবশ্যম্ভাবী আমাকে হতে হবে খাঁটি জহুরী। খোঁজতে হবে অব্যশই আমাকে খাঁটি সোনা, সেই সোনার সোনালি আলোতে সত্যপথ যাবে চেনা। সততার বিন্যাস হয়না আজকাল অহরহ, তাই অসৎরা কাটায় না কখনো বিরহ। তারা মজ্জাধিক্য হয়ে কাটায় তাদের জীবন, তাই দেখে সকলের তরে জেগে উঠে অসৎ মন। এহেন রয়েছে শুধুমাত্র একটি উপায়, সবাইকে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে সত্য পূজায়। (৩) ভাবগাম্ভীর্যের পূর্ণরূপ কবিতার পঙক্তি মুণ্ডপাত করে! এখনো সেই আদিম আর্য মানুষের চিন্তাকে, তুমি কবিতা বলছো! আরে অনার্যদের দাবিয়ে রাখার নিশানা উড়িয়ে কবে যে একজন অনার্য কবি হয়েছে! তোমার কি তা জানা আছে? জানা নেই তোমার? তবে তুমি আধুনিক যুগে মূর্খের মতো! চিন্তার ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সে অনার্য চিন্তিত হয়েছে, তোমার মতো করে সে তার চিন্তাকে আদিম ত্বত্ত্বে রাখেনি, সে আধুনিকতার ছাঁচে ফেলেছে তার চিন্তনকামকে! সে চিন্তনকামের চরিতার্থ করার জন্য মানুষের কাতারে পৌঁছাতে পেরেছে। কবিতা মনের ভাবগাম্ভীর্যের সংক্ষিপ্ত রূপ, ছন্দের গতিতে কিংবা অন্তমিলের সিলেবলের বর্ণানুক্রমে সাজানো গোছানো কিছু নয়, মগজের অর্থবহ ভাবগাম্ভীর্যের রূপ ছাড়া কবিতা অন্য কিছু নয় । (৪) সত্যিই সত্যের দাপট নেই দুনিয়ায় সত্যের দাপট দমে গেছে, মিথ্যের নগ্ন বর্বর ফাঁপরে, সত্য আজ যেন পঙ্কিল দিনগুলোর মাঝে, করুণঘন কান্নায় ভেঙ্গে যায় নিত্য। আহত হয়ে কুঁড়ে আজ ন্যায়বিচার, অন্যায় যেখানে বড় চেয়ারে অভীষ্ট, অতিপ্রাকৃত অধীশ্বরের বিচার, বাস্তবের দুনিয়ায় অপ্রচলিত শব্দ। মিথ্যের রমরমা ব্যবসায়ের মালকিন, আজ বড় অহংকারী হয়ে গেছে, মিথ্যের মহা দাপটে প্রকম্পিত মাটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় মিথ্যে সবচেয়ে খাঁটি। সত্যিই সত্যের কৌলিন্য হারাবার পথে, সত্যের আসল সম্ভ্রম হারাবার ভয়ে, কুঁকড়ে মুকরে আছে সম্ভ্রম সত্য, কারোরই স্বাক্ষর নেই সত্যকে ছুঁতে। মিথ্যের বেসাতি মিছিলে শামিল হতে, খুব তোরজোড় সকলের সমাগম ঘটে, অনন্তে অবগাহন করিনি সত্যের জন্য, তাই মিথ্যা আজ অশেষ ধন্য এবং ধন্য! শেয়ার শিল্প-সাহিত্য বিষয়: https://news71online.com/?p=3495&preview=true