গণ পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি পেলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি

প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ , জুন ২, ২০২০

মো.আলী আশরাফ মোল্লা।

প্রায় দু’মাসের অধিক সময় ধরে সব কিছুই বন্ধ থাকার পর সবকিছুই এখন খুলতে শুরু করেছে। যাত্রীবাহী পরিবহন বাস,লঞ্চ,ট্রেন সহ সকল ধরনের পরিবহন চালু করা হয়েছে গত ৩১ মে থেকে। গণ পরিবহন চালু করার পূর্বেই সরকারি নির্দেশনা হয়েছে যে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে গণ পরিবহন চালু করতে হবে। যথারীতি মালিক,শ্রমিক কতৃর্পক্ষ তারাও সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে স্বাস্থ্য বিধি মেনেই পরিবহন চালু করতে ঐক্যমত হলে ও পরিবহন চালুর প্রথম দিনেই অনেক ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। অনেক গাড়িতেই দেখা যায় সরকার
নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি তেমন মানা হচ্ছে না। পরিবহনে ইতিমধ্যে বতর্মানের নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির ফলে বিষয় টি নিয়ে অনেকের মাঝেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। তারা বলেন, এই বৈশ্বিক মহামারীর ফলে শুধু পরিবহন খাতেই তো লোকসান হয়নি সব খাতেই তো লোকসান হয়েছে। তাহলে পরিবহন খাতের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভাড়া বৃদ্ধি করা আর জনগনের জন্য ‘মড়ার উপর খরার গা’ একই অবস্থা। যখন স্বাভাবিক সময় আসবে তখন আর এই ভাড়া কমবে না। কারণ একবার যখন একটি জিনিসের বা গাড়ির ভাড়া বেড়ে যায় সাধারণত তা আর কমতে তেমন একটা দেখা যায় না। আর ভাড়া
বৃদ্ধির বিষয় টি নিয়ে গাড়িতে আগের চেয়ে অর্ধেক যাত্রী বহনের কথা বলা হয়েছে। দুই সিটে একজন বসবে, এক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী বহন করবে। বাস্তবতা হচ্ছে এমন যতক্ষন পর্যন্ত গাড়িতে সিট দেখা যাবে ততক্ষন পর্যন্ত যাত্রী উঠতেই থাকবে। বলা হয়েছে, গাড়ি চালু করার পূর্বেই গাড়িতে জীবাণু মুক্ত করার জন্য সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু বাস্তবতার চিত্র হচ্ছে বড়ই হতাশা জনক। দেশের প্রায় সব গুলো বাস স্টান্ডের চিত্রই অভিন্ন। কেউই মানছে না স্বাস্থ্য বিধি! যাত্রী ও না। পরিবহন কতৃর্পক্ষও না। আর এর ফলশ্রুতিতে সামনে আমাদের জন্য আরও ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে!

লঞ্চ পরিবহনে আরও বড় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য বিধির কোন বালাই মানা হচ্ছে না। এখানে দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিক সময়ে ঈদের যাত্রায় যেই রকম ভীড় পরিলক্ষিত হয় ঠিক সেই রকমই হচ্ছে। গতকাল বরিশাল থেকে ঢাকা গামী প্রত্যেকটি নৌ পরিবহনে এই চিত্রটিই দেখা গেছে। সেখানে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত কতৃর্ক অভিযান পরিচালনা করতে ও দেখেছি। তথাপিও এই জনশ্রুত ঠেকানো যাচ্ছে না! আমাদের যদি নিজ থেকে জনসচেতনতা তৈরি না হয় তাহলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের জন্য আরও ভয়াবহ কিছুর সসম্মুখীন হতে হবে।
সরকার লক ডাউন খুলে দিয়েছে। জীবন এবং জীবিকার তাগিদে এই করোনাকে সঙ্গে নিয়েই যেহেতু আমাদের বাচঁতে হবে, সেহেতু আগের চেয়ে ও বেশী সর্তকতা ও সচেতন হতে হবে। খবু বেশি প্রয়োজন ব্যতীত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে। অযথা কোথাও ঘুরা ফিরা এবং আনন্দ ভ্রমণ এই মুহূর্তে কোনভাবেই কাম্য নয়। আমাদেরকে এই মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজেদের সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। আমরা গণ পরিবহনে চলার ক্ষেত্রে নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা র দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আরও বেশী করে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সম্ভব হলে গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে। আপনার নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের, এই পৃথিবীতে বেচেঁ থাকাটাই সবে চেয়ে সুন্দর। আর আমাদের বেচেঁ থাকার জন্যই এই মহামারী বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। সুদিন আসবেই একদিন,ইনশা আল্লাহ। সেই দিন পর্যন্ত সবাই নিরাপদে থাকুন এবং পরিবার পরিজনকে সুরক্ষিত রাখুন।

লেখকঃ কলামিস্ট,সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সংগঠক।

Loading