পাইকগাছায় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় আইনজীবী স্বামী কারাগারে

মিলন দাশ মিলন দাশ

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ , জুলাই ৫, ২০২৩

যৌতুক নিরোধ আইনে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় জেল হাজতে গেলেন স্বামী এ্যাডঃ মোঃ আব্দুল হক গাজী এসকেন্দার। গত ২৬ জুন খুলনার বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত জামিন না মঞ্জুর করে ওই আইনজীবীকে জেল হাজতে পাঠান।

মামলা সূত্রে প্রকাশ, একে অপরকে ভালবেসে ছাত্রাবস্থায় পাইকগাছার সোনাতনকাটি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সাকাত গাজীর ছেলে খুলনা জজ কোর্টের আইনজীবী মোঃ আব্দুল হক গাজী এসকেন্দারের সাথে  ২০০৬ সালে তার বিয়ে হয়। ইশাণ নামে তাদের ৯ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন আরও জানান, প্রায় ১০ বছর যাবত তার পিতার বাড়িতে থেকে তার স্বামী খুলনার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। লেখাপড়ার সিংহ ভাগ খরচসহ অন্যান্য ব্যয়ভার তার পিতা বহন করত। এছাড়া খুলনায় একটি ফ্লাট কেনার জন্য ২০২১ সালে তার স্বামীকে নগদ এককালীন ৭ লক্ষ টাকা দেয় তার বাবা। পরে আরও ১০ লক্ষ টাকা দাবী করলে তা দিতে অস্বীকার করায় তার উপর নানা রকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এর মধ্যে ইয়াসমিন পারভীন বৃষ্টি ওরফে ডলি নামের এক মহিলার সাথে  পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে স্বামী এসকেন্দার। গত ৩ এপ্রিল খুলনা শহরের একটি জায়গায় তাদের অনৈতিক কাজে বাঁধা দেওয়ার পর থেকে তার উপর শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। দফায় দফায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করা সহ তাকে বড় ধরণের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। আর ১০ লক্ষ টাকা না দিলে ডলিকে বিয়ে করে ১০ লাখ টাকা নিয়ে ফ্লাট কেনা হবে বলে তাকে জানানো হয়। এঘটনায় তার স্বামী ও ডলির বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়। জিডি নং-১১২৭ তাং ১৯-৪-২০২৩।

মনোয়ারা খাতুনের কাছে জানতে চাইলে কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, প্রায় ৩ মাস যাবত আমার ও আমার সন্তানকে কোন ভরণপোষন না দিয়ে তার স্বামী ওই মহিলাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। এসব ঘটনায় তিনি গত ১০ মে  খুলনা উকিলবারে স্বামী এসকেন্দারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি গত ২৪/৫/২০২৩ তারিখে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ দিকে মিমাংসার নামে শ্বশুরের আহবানে গত ২৬/৫/২০২৩ তারিখে সোনাতনকাটী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে গেলে প্রায় ৪ মাসের অন্তঃসত্ত¡া মনোয়ারা খাতুনকে স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন বেধড়ক মারপিট ও জখম করলে মারাত্মক আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় সঙ্গে থাকা তার মাকেও লাঞ্চিত করা হয়। এ ঘটনায় গত ২/৬/২৩ তারিখে স্বামী এসকেন্দার ও শ্বশুর সাকাত গাজী এবং শাশুড়ি রমেছা বেগমসহ ৭জনকে আসামী করে পাইকগাছা থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলা নং-৪/১৭২। এদিকে মামলা তুলে নিতে এসকেন্দারের ভাই আসামী আব্দুল্লাহ গাজী ও বাবলু গাজী তাকে নানা রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের অব্যাহত হুমকিতে মনোয়ারা খাতুন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানান মনোয়ারা খাতুন।

 

Loading