বাংলাদেশের রাজনীতি ও ড্রাগন ফল

প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ , আগস্ট ২৩, ২০২২

কামাল পারভেজঃ

বাংলাদেশের রাজনীতি ও ড্রাগন ফল! আমি কেন বললাম আমার দেশের রাজনীতিকে ড্রাগন ফল। আমাদের দেশিও অনেক ফল রয়েছে, যা বিদেশি ফলের তুলনায় সুস্বাদু এখানকার প্রাকৃতিক ফল। এসব ফলের সাথে তুলনা না করে ড্রাগনের সাথে মিশিয়ে দিলাম। আমরা জানি ড্রাগন ফলটি বিদেশি ফল। লেটিন আমেরিকায় এই ফলের উদ্ভাবন বলেই সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে এখন বাংলাদেশও তার চাহিদা ব্যপক এবং ব্যবসার দিকেও অনেক কৃষক সফল হয়েছে বলে জানা যায়। নতুনত্ব উদ্ভাবনের অনেক ফলই এখন প্রাকৃতিক ফলের তুলনায় অনেক বেশি চাহিদা সম্পন্ন হয়ে উঠেছে। সেই সাথেও আমাদের শরীরে নতুনত্ব রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। তেমনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে পারি জমাচ্ছি। যাইহোক ড্রাগন ফল সম্পর্কে একটু জেনে নেই।
ড্রাগন ফল কি?
পিতায়য়া (Pitaya) বা ড্রাগন ফল (Dragon Fruit) হচ্ছে এক ধরনের ফণীমনসা বা ক্যাকটাস প্রজাতির ফল। এটি হোনোলুলু কুইন নামেও পরিচিত। মেক্সিকো, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, কোস্টারিকা, উত্তর অ্যামেরিকায় ড্রাগন ফলের উৎপত্তি হলেও সুস্বাদু এই ফলটি বর্তমানে দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর অনেক দেশে চাষ করা হয়। বিভিন্ন রঙের ড্রাগন ফলের মধ্যে লাল রঙের ড্রাগনফলই বেশি পাওয়া যায়।
এই ফলের বাইরের আবরণে রয়েছে অনেকটা ড্রাগনের গায়ের চামড়ার মত খোঁচা খোঁচা আঁশ, আর এর থেকেই এই ফলের নাম ড্রাগন ফল। এই ফল উৎপাদন হয় উষ্ণমন্ডলীয় আবহাওয়ায়, আর মধ্য আমেরিকা এর আদি জন্মস্থান। দক্ষিণ আমেরিকা থেকেই মূলত এই ফলের আমদানি। কিন্তু এই ফলের নামের কারণে ভারতে অনেকে মনে করে এই ফল এসেছে চীন দেশ থেকে।
ভারতে গুজরাটের রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে যে ড্রাগন ফলের নামের সাথে “চীনা সংশ্লিষ্টতা” থাকার কারণে এই ফলের নাম বদলে এর নতুন নামকরণ হবে ‘কমলম্’, যা পদ্ম ফুলের সংস্কৃত নাম। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঠাট্টা-মস্করার ঝড় বইছে – এক কথায় এবার ফলের নাম নিয়ে টানাটানিতে তোলপাড় সামাজিক মাধ্যম।গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভিজয় রুপানি তার সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। পদ্ম ফুল হিন্দুদের জন্য পবিত্র এবং এটি ভারতের জাতীয় ফুল। ভারত ও চীনের মধ্যে হিমালয় অঞ্চলে দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ও অচলাবস্থার পটভূমিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন তলানিতে রয়েছে।
উপরের লেখাটা পড়ে বুঝতেই পেরেছেন ড্রাগন ফলের আদিকথা। তবে আমি এবিষয়ে একটু ভিন্ন মতে কথা বলতে চাই, বিদেশি একটা মদের বোতলের নামও ছিলো ড্রাগন। যারা আশি দশকে বিদেশে গিয়ে নেশায় মাতাল হতো তাঁরা পুরোপুরি ড্রাগনেই আসক্তি ছিলো। তখনকার সময় ড্রাগস শব্দ থেকে মদের বোতলের উপর বিভিন্ন নামে লেভেল লাগিয়ে তা বিভিন্ন দেশের রপ্তানি করা হতো। আমরাও এখন বিদেশি ফল আমাদের দেশে উৎপাদন করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে যাচ্ছি। ড্রাগন ফল নামটা ইংরেজি শব্দে ব্যবহারিত এবং দেখতে সুন্দর লাগলেও ভিতরের রঙটা ময়লা সাদার মতো, খাওয়ার সময় না পাবেন মিষ্টি না হবে পানসা। মুখের রুচিসম্মতের কথা গোপন থেকে যাবে। আমাদের দেশের রাজনীতিকে ডাস্টবিনের সাথে তুলনা করলেও কম হবে কিন্তু বাংলা মদের পেয়ালায় নাক ডুবিয়ে মদপানে জারি সারি গানের সুর তুলতে খারাপ লাগেনা। বর্তমান দেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনার চাইতে সমালোচনার ভারটা অনেক বেশি। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র হচ্ছে ফণীমনসা বা ক্যাকটাস প্রজাতির মতোই এবং অনুরূপ ড্রাগন ফলের বিপরীতে আরেকটি “মাকাল ফল” যা বাইরে সুন্দর ভিতরে নিস্ফলা।অপরিচিতা গল্পে অনুপমকে গুণহীন বুঝতে মাকাল ফল এর সহিত তুলনা করা হয়। মাকাল দেখতে সুন্দর অথচ ভেতরে দুর্গন্ধ ও শাঁসযুক্ত খাওয়ার অনুপযোগী কাল। বর্তমান নেতারাও ঠিক অনুরূপ।– দেশবাংলা

Loading