কলমাকান্দায় সীমান্তবর্তী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন: হুমকির মুখে আদিবাসিদের জীবন-জীবিকা

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ , অক্টোবর ৩০, ২০২১

ভারতের সীমান্তের পাহাড়ের পাদদেশে নেত্রকোনা মহাদেও নদীতে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন ও নদী ভাঙ্গনে হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে আধিবাসীরা।

মানববন্ধন, সভা- সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলকরে তারা আন্দেলন করে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিলছে না তেমন কোন সারা । তবে বিষয়টি শুনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারীদের দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক।

নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার ভারত থেকে বয়ে আসা পাহাড়ী নদী মহাদেও । তার সীমান্ত ঘেষেই অবস্থান পাতলাবন ও সন্নাসী পাড়া সহ আরো অনেক গ্রাম । এসব গ্রামের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মহাদেও নদী। স্থানীয় আদিবাসিরা যুগযুগ ধরে বংশপরমপরায়ন ক্রমে পরম যত্নে এই নদীটিকে বাচিয়ে রেখেছে তারা । এক সময় বিচিত্র পাথরে সমাহার স্বচ্ছ পানি ও নির্মল পরিবেশে ছিলো। এই মহাদেও নদীর ধারায় দুই তীর ঘেষা স্থাানীয় আদিবাসিদের চলত জীবন জীবিকা ।

কিন্তু আজ কিছু প্রভাবশালী ও স্বার্থান্বেষী মহল তাদের প্রভাব কাটিয়ে পরিবেশের জন্য নিষিদ্ধ শত শত বোমামেশিন বসিয়ে পরিবেশ বিনিষ্ট করছে । উঠিয়ে নিচ্ছে বালু পাথর ভেঙে যাচ্ছে নদীর দু’কুল । ফলে নদীর উভয় তীরে বসবাসরত শতশত পরিবারের বসতভীটে হুমকির মুখে পড়েছে । আবার বহু ঘর -বাড়ি ও ফলজ – বনজ গাছপালা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে । বালি ও পলিমাটি পড়ে একরের পর একর ফসলি জমি পতিত জমিতে পরিনত হয়েছে ।

নেত্রকোনা জেলাপ্রশাসনের দরপত্র অনুযায়ী ০৩/০৩/২০২১ইং৪ লক্ষ টাকায় নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার মহাদেও নদীর ওমরগাঁও, হাসানোয়াগাঁও ও বিশাউতি গ্রাম এলাকার ৩৫ দশমিক ১৫ একর জায়গা থেকে শুধুমাত্র বালু উত্তোলনের জন্য রবীন্দ্র চন্দ্র এন্টারপ্রাইজকে এক বছর মেয়াদে ইজারা দেয়। ইজারার মেয়াদ আগামী ৩১ চৈত্র, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ তারিখে শেষ হবে।

ইজারাদার প্রতিষ্ঠান শর্তভঙ্গ করে ভারতের সীমান্তবর্তী মহাদেও, সন্নাসীপাড়া, পাতলাবান, কান্দাপাড়া, বরুয়াকোণা, চিকনটুপ ও ডাকাইয়াপাড়া গ্রামসহ অন্যান্য এলাকা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে বালি ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কোন কাজ হয়নি বলে জানিয়েছে  স্থানীয়রা।

আদিবাসি নেতা এ সোলেমার বলেন, এই পরিস্থিতে বালু পাথর বহন কারী ভারী যান চলাচলের কারনে বিভিন্ন এলাকার সাথে সংযুত একমাত্র রাস্তাটি স্থানীয় এলাবাসীর চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে । বালু ও পাথর যদি ক্রমাগত চলতে থাকে তাহলে তিনটি মৌজার ১০ থেকে ১৫টি গ্রমের শত শত ঘর বাড়ি ফসলি জমি গাছপালা বরুয়াকোনা ক্যাথলিক ধর্মপল্লী অধীনে পাতলাবান গ্রমের গীর্জাঘর ও বরুয়াকোন বাজার সহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ।

নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর  রহমান বলেন, বালু মহালের সীমানা অতিক্রম করে যারা বালি ও পাথর উত্তোলন করছে তা বিধি মোতাবেক নয়,  সরজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Loading