সরিষা ফুলের মধু চাষীরা মৌ-চাষে ব্যস্ত

প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ , জানুয়ারি ৩০, ২০২১

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ ধরে যত দুর দৃষ্টি যায় ততদুর শুধু হলুদের আবরণ। পথের দুই ধারে সরিষার ফুলে বিস্তীর্ণ মাঠ হলুদ রং এ ছেয়ে গেছে। হলুদ ফুলে ঘিরে রেখেছে পুরো গ্রাম। সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহ করতে মৌ-চাষীরা ক্ষেতের পাশেই বসিয়েছেন ১২০টি মৌচাক বাক্স। তাই এলাকাবাসী এই গ্রামের নাম দিয়েছেন “সরিষার গ্রাম।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রেকর্ড পরিমাণ সরিষার চাষ এ গ্রামে এবারেই প্রথম। আগে ধান তুলে গম, ভুট্টা আবাদ করা হতো। তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে এবার দীঘিয়া গ্রামের প্রায় ৭০একর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫০ বিঘা জমির সরিষার বীজ বিনামূলে ১৫জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন উপজেলা কৃষি অফিস। এবার সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ারও সম্ভবনাও দেখছেন তারা। দিঘীয়া গ্রামের কৃষক মনসুর আলী, রমজান আলী বলেন, আগে ধান, গম আবাদ করতাম, কৃষি অফিসারদের পরামর্শে এবার জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। যা ২-৩ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ করে সরিষা উত্তোলন করা যায়। আর বাজারে ২ হাজার থেকে ২২’শ টাকা মণ বিক্রি করতে পারি।
রাণীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮শত ৫০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার আবাদের পরিমাণ ৩ হাজার ৩শত ৫০হেক্টর। এর মধ্যে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামেই প্রায় ৭০ একর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বারি সরিষা-১৪,১৫ বিনা সরিষা,৪,৯ জাতের সরিষা আবাদ করছে। অন্যদিকে এ উপজেলায় ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ হওয়ায় মৌ-চাষী সোহেল রানা দিঘীয়া এলাকায় ১২০টি মৌচাক বাক্স বসিয়ে সপ্তাহে দু-মণের অধিক খাঁটি মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪শ টাকায় তিনি বিক্রি করছেন। শীতের এই মৌসুমে গ্রামের মানুষেরা নির্ভেজাল খাঁটি মধু হাতের নাগালে পাওয়ায় খুশিতে আত্নহারা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, সরিষা আবাদ খুব প্রয়োজনীয় একটি ফসল, এ এলাকার মানুষ সেটা তেমন বুঝতো না। আমি তাদের বুঝিয়ে এবারে একটি গ্রামে সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করে ব্যাপকভাবে এ এলাকায় সরিষার আবাদ করাতে পেরেছি।

Loading