মরমি কবি হাছন রাজার জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ , ডিসেম্বর ২১, ২০২০

মরমি কবি হাছন রাজার ১৬৬তম জন্মদিন আজ। ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১) সুনামগঞ্জ শহরের কাছে সুরমা নদীর তীরে লক্ষ্মণশ্রী পরগনার তেঘরিয়া গ্রামে জন্ম নেন তিনি। হাছন রাজা পরাক্রমশীল জমিদার ছিলেন। একসময় তিনি তার সম্পদ জনকল্যাণে দান করে দিয়ে কয়েকজন সঙ্গিনী নিয়ে হাওরে হাওরে ভাসতে থাকেন। গুণী এই মরমি কবি বাংলা ভাষাভাষি মানুষ ছাড়াও উপমহাদেশেও সমাদৃত।

তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, ‘আগুন লাগাইয়া দিলও কুনে হাছন রাজার মনে’, ‘গুড্ডি উড়াইল মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’ এবং এ ধরনের অনেক গান।

হাছন রাজার বাবা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাছন জমিদারিতে অভিষিক্ত হন। প্রথম দিকে অত্যাচারী হলেও পরে সবকিছু উইল করেন মানুষের জন্য। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষ্মণশ্রী ও সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মরমি কবি হাছন রাজা। জমিদারি ছেড়ে সৃষ্টিকর্তার খোঁজে নেমে পড়েন। মধ্য পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত হন। একসময় তিনি বিশ্বাস স্থাপন করেন, নিজের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার বাস।

নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা মনে করেন, হাছন রাজার গান বিকৃত হচ্ছে, অনেক গান হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণ শিল্পী সামির পল্লব, ডিউক চৌধুরী ও অমিত বর্মণ বলেন, আমরা নতুন প্রজন্মের যারা লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছি, তাদের অনেকেই হাছন রাজার গানের কথা ও প্রকৃত সুরে থাকছি না। তাতে হাছন রাজা যে ভাবনা নিয়ে গান লিখেছিলেন, তা প্রকাশ পায় না। সরকারি উদ্যোগেই হাছন রাজার গান এবং গানের সুর সংরক্ষণ করা জরুরি।

সুনামগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, হাছন রাজার অনেক গান সংরক্ষণ করা হয়েছে। হাছন রাজা একাডেমি করার উদ্যোগ আছে সরকারের।

হাছন রাজা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সামারীন দেওয়ান বলেন, জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল (আজ) থেকে হাছন রাজা মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হচ্ছে।

Loading