পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া কৃত্রিম পায়ে হাঁটছেন কলেজ ছাত্র হিমেল নিউজ৭১অনলাইন নিউজ৭১অনলাইন প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ , নভেম্বর ৩০, ২০২২ এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল রাজশাহী বাঘা উপজেলার কলেজ ছাত্র হিমেলের (১৮)। কিন্তু প্রায় আট মাস আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের রামদার কোপে বাম পা হারান তিনি। এরপরই জীবনের সবকিছু বদলে যায় তার। দুঃসহ সেই স্মৃতিটা আজও টাটকা হিমেলের কাছে।সেদিন ছিল ২০২২ সালের ১৮ মে। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তার এবং তার বাবা মোকাররম হোসেনের ওপর রামদা হাতে হামলা চালায় প্রতিবেশী জেনরাল নামক ব্যক্তি। বাঁচার জন্য বাবা-ছেলে দুজনে দৌড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হোঁচট খেয়ে মাটিতে পরে যাওয়া বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে রামদার কোপে মারাত্মক জখম হয় তার বাম পা। এরপর কেটে ফেলতে হয় সেই পা।এত দিন ক্রাচে ভর করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিল এই কলেজ ছাত্রের দুর্বিষহ জীবন। দেওয়া হয়নি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা।দীর্ঘ চিকিৎসার পর সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড কেন্দ্রে (সিআরপি) হিমেলের কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়েছে। প্রায় আট মাস পর দুই পায়ে হাঁটতে পেরে হিমেলের মুখজুড়ে উপচে পড়ছিল হাসির ঝিলিক। সেই হাসি নিয়ে বললেন, যেন হারিয়ে যাওয়া পা আবার ফিরে পেলাম।হিমেলের জীবন বদলে দেওয়ার পেছনে ছিল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের অবদান।দীর্ঘদিন ব্যয়বহুল চিকিৎসা সেবা গ্রহণের কারণে আর্থিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল পরিবারটি। আর তখনই পরিবারটির পাশে দাঁড়ায় প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্থদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) উপস্থিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে হিমেলের জন্য উপহার হিসেবে দেন একটি কৃত্রিম পা।পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, আমার হিমেলরা আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে ছেলেটির একটি পা হারাতে হয় খবরটি শোনার পর থেকেই আমি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার খোঁজ-খবর রেখেছি। তরুণ একটি ছেলে যে কিনা এখনও কলেজের গণ্ডি পেরুতে পারেনি, তার এমন অসামান্য ক্ষতি সত্যিই মেনে নেওয়া কষ্টকর। দীর্ঘ চিকিৎসার পর আজকে ছেলেটির জন্য একটি কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করেছি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কিংবা সমাজের একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি হিসেবে এ ধরনের সহযোগিতা এবারই প্রথম নয়। সমাজের সকলেরই উচিত এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো। আর এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে যাচ্ছে সিআরপি।তিনি বলেন, প্রতিদিন এ ধরনের প্রায় হাজার খানেক মানুষ এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা পরবর্তী সেবা গ্রহণের জন্য আসছে, এটি সত্যিই দারুণ প্রশংসনীয়। আমি চাইব সিআরপির এই ধরনের কাজের ব্যপ্তি আরও বিশালভাবে দেশের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পরুক এবং এর জন্য আমাদের সবারই যারযার জায়গা থেকে এগিয়ে আসা উচিত।হিমেলের বড়বোন পিংকি খাতুন ঢাকা মেইলকে বলেন, এই দূর্ঘটনার প্রথম থেকেই মন্ত্রী মহোদয় আমার ভাই এবং আমার পরিবারের পাশে সার্বক্ষণিক একজন অভিভাবকের মতো দাঁড়িয়েছেন। আজ আমার ভাইটি উনার দেওয়া উপহার কৃত্রিম পায়ে ভর করে উঠে দাঁড়িয়েছে এবং হেঁটে বেড়াচ্ছে। এর চেয়ে আনন্দ আর কিছুই হতে পারে না। উনার কাছে আমি এবং আমার পুরো পরিবার আজীবন কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি সিআরপিকেও অনেক ধন্যবাদ তাদের ট্রিটমেন্টে আমার ভাই এখন নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। শেয়ার মানুষ মানুষের জন্যবিষয়: