'গুম বন্ধ কর, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’

আর্ন্তজাতিক গুম সপ্তাহে ফেনীতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ , মে ২৬, ২০২৩

ফেনী প্রতিনিধি

গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আর্ন্তজাতিক গুম সপ্তাহে ফেনীতে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার কর্মী ও গুমের স্বীকার হওয়া ব্যক্তির স্বজনরা।

গুম হওয়া ব্যক্তির স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক ফেনী’র যৌথ আয়োজনে ‘গুম বন্ধ কর, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’ শ্লোগানে শুক্রবার সকালে শহরের শহিদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কে দিবসের মুলপ্রবন্ধ পাঠ করেন গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা বেগম।

ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাপ্তাহিক ফেনী খবর সম্পাদক ও চ্যানেল আই’র ফেনী প্রতিনিধি রবিউল হক রবির সভাপতিত্বে এবং মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক’র কো-অর্ডিনেটর, অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন ও দৈনিক মানবজমিন’র জেলা প্রতিনিধি নাজমুল হক শামীম’র সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক সংগ্রাম’র জেলা প্রতিনিধি একেএম আবদুর রহিম, ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, ডিবিসি নিউজ ও ডেইলি অবজারভার ফেনী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময়’র সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন।

বক্তব্য রাখেন ফেনী রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার মানিক, ফেনী বিকন কলেজের প্রভাষক ও দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন, অধিকার’র ডিফেন্ডার তন্বী সোম, আলাপন আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র ফেনী’র যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ফরায়েজী।

মানববন্ধন ও সমাবেশে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্ট এসোসিয়েন ফেনী শাখার সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল বুলবুল, ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশ’র ফেনী জেলা সভাপতি ও দৈনিক অজেয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূইয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী’র দপ্তর সম্পাদক এমডি মোশাররফ হোসেন, ফেনী লিও ক্লাব’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউসুফ আহমেদ নিশাদ, ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসু, গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের বড় ভাই মাহফুজুর রহমান, রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কাজি ইকবাল আহমেদ পরানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

গুম সপ্তাহের মুল প্রবন্ধে জানানো হয়, মে মাসের শেষ সপ্তাহকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন করা হয়। ১৯৮১ সালে ফেডারেশন অব এসোসিয়েশন ফর রিলেটিভস অব দি ডিটেইন্ড ডিসএ্যপিয়ার্ড নামের দক্ষিণ আমেরিকার একটি সংগঠন প্রথম পালন করা শুরু করে। এর পর থেকে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করে চলেছে।

অধিকার জানায়, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন-এমন একটি চুক্তি যা অনুস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

অধিকার আরও জানায়, ২০০৯ সাল থেকে দেশে আশংকাজনক হারে বেড়েছে গুমের ঘটনা। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা গুম ও বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ খুন হলো রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের চরম বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন বহাল থাকায় মানবাধিকার চরমভাবে হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে। জনগনের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের প্রতিকার করতে ভিকটিম পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

মানববন্ধনে বক্তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ফেনীর যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনকে আইনশৃঙ্খরা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ৯ বছরেও পরিবার তার হসিদ পায়নি। রিপনের মত আর কোন ব্যাক্তি যেন গুমের শিকার না হয় সেজন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানান।

Loading