যশোর -১,শার্শা আসনে পরিবর্তনের দাবিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার শ্লোগানে মুখরিত নারী-পুরুষ

প্রকাশিত: ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ , ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩

‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ আর ট্রাক মার্কার জয়ের ধ্বনী’ শ্লোগানে মুখরিত করে পরিবর্তনের শার্শা গড়ার দাবিতে হাজার হাজার নারী পুরুষ রাস্তায় নেমেছে। শুক্রবার শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ও কায়বা ইউনিয়নে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ট্রাক প্রতিকের প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর সভার স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত সাবেক সফল মেয়র আধুনিক বেনাপোলের রুপকার আশরাফুল আলম লিটন এর প্রচার প্রচারনা গনসংযোগে এ দৃশ্য দেখা যায়। রাস্তার দুপাশে

নারী পুরুষরা গনসংযোগ কালে মেয়র লিটনকে ভি-চিহ্ন প্রদর্শন করে পরিবর্তনের শার্শা দাবি করে। শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ি বেলতলা, রাড়িপুকুর বাগআঁচড়া

বাজারের সাতমাইল এলাকায় বেনাপোল পৌর সভার সাবেক মেয়রের নির্বাচনী গনসংযোগে মানুষের ঢল নেমেছে। এসময় নির্যাতিত ও সাধারন মানুষ, চা-মুদি দোকান থেকে সর্বস্তরের ব্যবসায়ী, কৃষক-জেলে-দীনমজুর বিগত ১৫ বছরের শার্শার দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনে জয় যুক্ত করে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনকে জাতীয় সংসদে পাঠাতে চান। এলাকার নারী পুরুষ এ প্রার্থীকে মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেন এবং জয় নিশ্চিত বলে আশ্বাস দেন। এসময় কেউ কেউ

প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কায়বার রাড়িপুকুর গ্রামের চায়ের দোকানদার আত্তাব হোসেন বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর আমরা অনেক নির্যাতন নিপীড়ন অত্যাচার জুলুম এর মধ্যে দিয়ে বসবাস করছি। প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় মারামারি লেগে থাকে। সেই সাথে খুন খারাপি তো আছে। তিনি বলেন, বিগত সময়ের মধ্যে শার্শায় ৭২ টি দলীয় নেতা কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।

বাঁগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আশাদুজ্জামান বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর নানা অত্যাচার-নির্যাতন আর অনাচারে আমরা জর্জরিত। আমি এই ইউনিয়ন এর একজন নির্বাচিত সদস্য হওয়া সত্ত্বেও শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে ও নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এই ইউনিয়নের একজন চেয়ারম্যানসহ শার্শায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৬ ডজন নেতা কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই জনপদের শীর্ষ জনপ্রতিনধি খুনিদের পক্ষ নেওয়ায় আজও একটি হত্যা-খুনেরও বিচার হয়নি। ভুক্তভোগি পরিবারগুলো বিচারের দাবিতে আজো পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা এখনো পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছে।

‘সাতমাইল এলাকার আর্জিনা বেগম জানান, ‘আমি একজন বয়স্ক মানুষ। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ দেখেছি। সেই সময় যে নির্যাতন নিপিড়ন হয়েছে তার চেয়ে আমাদের এলাকায় বেশী অন্যায় অত্যাচার হচ্ছে। আমরা পরিবর্তন চাই। আর আমরা সহ্য করতে পারছি না। আমরা পুত্র সন্তান বাড়ি থেকে বাহির হলে শঙ্কায় থাকি। তারা যেন নিরাপদে বাড়িতে ফিরে আসে।’

যশোর শার্শা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ট্রাক প্রতিকের প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছি না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী দলীয় লোক হলেও তার কোন শাস্তি হবে না। যে কেউ নির্বাচন করতে পারবে। আমি এবং দল চায় সকল ভোটার বাধাহীন ভাবে ভোট সেন্টারে যাবে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিবে।

আর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই জনপদের উন্নয়নের কথা মানুষের কথা বলতে যাকে আপনারা আগে নির্বাচন করে সংসদে পাঠিয়েছেন তিনি আপনাদের কথা বলতে সংসদে যান না। মানুষের কথা উন্নয়নের কথা বলেন না। বেশ কয়েকটি সংসদে নির্বাচিত হয়ে তিনি সংসদে যান না। তাকে মানুষ কেন ভোট দিবে? দেশের অন্য জায়গা থেকে শার্শা উন্নয়নে অনেক পিছিয়ে আছে। এখানে মানানসই টেকসই উন্নয়ন হয়নি। আমি চাই বেনাপোলের মেয়র থাকা সত্ত্বেও বেনাপোলের মানুষের প্রত্যাশিত উন্নয়নের পরেও বাইরেও উন্নয়ন করেছি। আমি আশা করি এবং বিশ্বাস করি শার্শার মানুষকে আমি ভালবাসি এবং আমি একজন উন্নয়নকামি মানুষ। সেই কারণেই শার্শার মানুষ আমাকে ভোট দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে বেনাপোলের যেমন একটি প্রবেশদ্বার আছে তেমনি শার্শায় প্রবেশ করতে গেলেও আরো একটি প্রবেশদ্বার তৈরী করব যা হবে এই জনপদ শুধু নয় রাষ্ট্রের সব থেকে নন্দিত প্রবেশদ্বার। যা বিশ্বের কাছে মাথা উচু করে দাড়াবে। উন্নয়নের স্বার্থে পরিবর্তন এর স্বার্থে আমাকে এই উপজেলার সকল স্তরের মানুষ ভোট দেবেন বলে আমার বিশ্বাস।’

নির্বাচনের পরিবেশ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শতভাগ পরিবেশ হয়েছে আমি বিশ্বাস করি না। কারন এখনও শঙ্কা আছে। মানুষ ভোট দিবে এবং ভোট গননা করে তবে ভোট সেন্টার থেকে যাবে। ১৭৭১ সালে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের ছিল না কোন গোলাবারুদ, অস্ত্র। শুধু মানুষের ছিল মনোবল। তাই সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে পাকিস্তানীদের তাড়িয়ে ছিল। তেমনি বিগত ১৫ বছরে দুঃশাসন এর অবসান মানুষের বুকে যে পাথর চাপা ছিল সেই জবাব এবার মানুষ ব্যালট এর মধ্যে দিয়ে দিবে।

এসময় তিনি বলেন, আজ যারা গন্ডগোল করছে, এমনকি আমাকেসহ আমার অনেক কর্মীকে মারধর করেছে। কারন ওরা দুর্বল। ওরা ভোটারদের বাধা দেবে। পোষ্টার ছিড়ছে, কারণ ওরা দুর্বল হয়ে গেছে। ওরা বুঝতে পারছে মানুষ ওদের ভোট দেবে না। কারন আমি চাই শতভাগ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাক যাকে খুশি ভোট দিক। কেন ভোটারদের বাধা দিতে হবে। দুর্বল লোক এসব করে। তারা পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে জনগনের উপর হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি শান্তি প্রিয় মানুষ। আমি চাইব সকল ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাবে যাকে খুশি ভোট দিবে।’

Loading