ময়েন উদ্দিন মোল্লা সভাপতি পদপ্রার্থী হচ্ছেন রেলশ্রমিকলীগের

প্রকাশিত: ৬:০১ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ৫, ২০২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ রেল শ্রমিক লীগের নতুন কমিটিতে কে সভাপতি সেক্রেটারী পদে প্রার্থী হবেন এনিয়ে রেলপাড়ায় চলছে উষ্ণ আলোচনা। কারন এই সংগঠনটি রেল কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ন সংগঠন। সৃষ্টিলগ্নের পর থেকেই অবসর প্রাপ্তরাই বেশী সময় ধরে গুরুত্ব পূর্ন পদগুলোতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যার ফলে অনেকেই মনে করতেন, কর্মরত শ্রমিকদের দাবী দাওয়া সঠিক ভাবে আদায় করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। সেই সুত্রে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন মাসুম বিল্লাহ। সে রীটে হাইকোর্ট অবসরপ্রাপ্ত ৫ নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটি করার জন্য আদেশ দেন। পরবর্তীতে বাদ যাওয়া নেতৃবৃন্দ আপীল করলেও সেই আপীল খারিজ হয় বলে জানান বাদী মাসুম বিল্লাহ। তাই কমিটিতে অবসর প্রাপ্তদের বাদ দিয়ে কর্মরত সিনিয়রদের চান অনেকে। এরই সুত্র ধরে অনেকেই গুরুত্বপূর্ন পদগুলোতে প্রার্থী হতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে সভাপতি প্রার্থীদের তালিকায় আসতে চান মইন উদ্দিন মোল্লা। রেলের বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীর মধ্যে পুরাতন কর্মচারী হলেন মোঃ ময়েন উদ্দিন মোল্লা। তিনি সিগনাল টেলিকমে কারপেন্টার পদে কর্মরত। বাংলাদেশ রেলওয়ের শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব রহমত উল্লাহ চৌধুরীর আদর্শে উৎসাহিত হয়ে রেলশ্রমিকলীগে যোগ দেন তিনি। কর্মের পাশাপাশি কর্মচারীদের দাবীদাওয়া আদায়ের সংগঠন রেল শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সিআরবি শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেইসাথে রাজনৈতিক অঙ্গনে চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিকলীগের সদস্য হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জনসেবাকে আদর্শ হিসাবে সামনে রেখেই তিনি রাজনীতি করেন।
কেন তিনি সভাপতি হতে চান এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মহামান্য আদালত অবসর প্রাপ্তদের মুল পদগুলো থেকে বাদ দেয়ায় আমি মনে করি আইন অনুযায়ী সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছে আদালত। অবসর প্রাপ্তরা দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকলীগের পদ আকড়ে থাকায় রেল সংগঠনের কোন গুনগত পরিবর্তন হয়নি। সেইসাথে দীর্ঘদিন যাবত এটা পারিবারিক কমিটি হিসাবে পরিচিত হয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের দখলে থাকা সংগঠনে কোনরুপ গতি ছিলনা। তাই আমরা কর্মরতরাও চাইনা অবসরপ্রাপ্তরা কমিটির মুল পদগুলোতে আসুক। কারন তাদের নিয়ে বর্তমান কর্মরত কর্মচারীদের কোন লাভ হচ্ছেনা। আমি দেখেছি, সঠিক সময়ে কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। আমি সিনিয়র কর্মচারী হিসাবে সভাপতি হলে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো। সেইসাথে সংগঠনকে গতিশীল করতে কমিটির সবার সহযোগীতা নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। বর্তমানে রেলশ্রমিকলীগে তিনটা গ্রুপ। আমি মনে করি, রেল শ্রমিকলীগের গ্রুপিংটা বাংলাদেশ রেলওয়ের সর্বনাসের কারন। এই গ্রুপিংয়ের কারনে মুলত দাবী দাওয়া আদায় হচ্ছেনা। তাদের গ্রুপিংয়ের কারনে সুবিধাভোগীরা সুযোগ নিচ্ছে। বর্তমান শ্রমিকলীগের হাতে কোন ক্ষমতা নেই। তাই আমি চাই, রেলশ্রমিকলীগের তিনটা গ্রুপ এক হয়ে কাজ করুক। তিন গ্রুপের ঐক্য হলে রেল কর্মচারীদের দাবী দাওয়া আদায়ে শক্তিশালী একটি সংগঠন হবে।
রাজনেতিক জীবনে ১৯৭১ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলিগের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন। ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঢাকার কমলাপুরে ডান পায়ে গুলি লাগে। তবু জীবন চলার যুদ্ধে থেমে থাকেননি তিনি। আশি ও নব্বইর দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কেউ তাকে দাবাইয়া রাখতে পারেনি। রেল শ্রমিক আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সক্রিয় কর্মি।

Loading