ফাইজারের টিকা তৈরি করে শীর্ষ ধনী হলেন মুসলিম স্বামী-স্ত্রী

প্রকাশিত: ২:২২ অপরাহ্ণ , মার্চ ১৬, ২০২৩

করোনাকালীন টিকার জন্য সারাবিশ্বেই তখন হাহাকার। একদিকে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, অন্যদিকে পাওয়া যাচ্ছে না ওষুধ। সারাবিশ্বে যখন এমন সংকট চলমান তখন করোনার টিকা প্রস্তুতে এগিয়ে আসেন উগুর সাহিন (৫৫) ও তার স্ত্রী ওজলেম টুয়েরেসি।

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি টিকার কথা। আমরা অনেকেই জানি না এই সাফল্যের পেছনের গল্পটা কী। জার্মান এক চিকিৎসক দম্পতির যৌথ গবেষণার সাফল্য এই টিকা, যার সুফল পেয়েছিল সারাবিশ্ব। আর এই সাফল্য ওই দম্পতিকেও উঠিয়ে দিয়েছে জার্মানির শীর্ষ ১০০ ধনীর তালিকায়। পুঁজিবাজারে বায়োএনটেকের শেয়ারের দাম ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় জার্মানির শীর্ষ ১০০ ধনীর মধ্যে উঠে এসেছে এই দম্পতির নাম। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

উগুর সাহিন তুর্কি থেকে জার্মানিতে আসা এক অভিবাসীর সন্তান সাহিন। তার বাবা জার্মানির কোলোনে গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফোর্ডের একটি কারখানায় কাজ করতেন। খুবই বিনয়ী স্বভাবের মানুষ সাহিন। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম এমআইজি এজি বোর্ডের সদস্য ম্যাথিয়াস ক্রোমায়ার সাহিনের সম্পর্কে বলেন, ‘এত সাফল্যের পরও খুবই নম্র স্বভাবের মানুষ সাহিন। সব মিটিংয়ে খুবই সাধারণ পোশাকে আসেন তিনি। সব সময় সঙ্গে থাকে তার বাইসাইকেলের হেলমেট আর ব্যাক প্যাক।’ ফার্ম এমআইজি এজি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বায়োএনটেককে সহায়তা দিয়ে আসছে। ছোটবেলা থেকে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন সাহিন।

এটাই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান, স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে। মেডিসিন ও চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। শুরুতে হামবুর্গের একটি হাসপাতালে শিক্ষকতায় কাজ শুরু করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে সেখানেই টুয়েরেসির সঙ্গে পরিচয় হয় তার। চিকিৎসা গবেষণা এবং ক্যানসার বিজ্ঞান তাদের দুজনের আবেগের জায়গা হয়ে ওঠে। টুয়েরেসিও এক তুর্কি চিকিৎসকের মেয়ে। একবার সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এমনকি তাদের বিয়ের দিনও দুজন ল্যাবে কাজের জন্য সময় তৈরি করে নিয়েছিলেন। এই দম্পতি শুরু থেকেই কাজ করেছেন ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে। যৌথ গবেষণায় তারা ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন ইমিউন সিস্টেম তৈরিতে সক্ষম হন। ২০০১ সালে উদ্যোক্তা হিসেবে জীবন শুরু হয় তাদের।

ক্যানসারবিরোধী অ্যান্টিবডি বিকাশের জন্য গ্যানিমেড ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তারা। তবে সাহিন কখনই শিক্ষকতা পেশা বা একাডেমিক গবেষণা ছাড়েননি বা সেখান থেকে দূরে সরে যাননি। সে সময় তিনি মেইনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন।

Loading