ফেনীর পঞ্চ নারীকে সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ , নভেম্বর ১৭, ২০২১

মারিয়া মাহমুদ

নারীদের নিয়ে ভাবতে বুকে সাহস লাগে।
এখন সাহস শব্দ টা পুরোনো হয়ে গেছে।
সাহস শব্দ টা এখন দুঃসাহস !
এই দুঃসময়ে দুঃসাহস জুগিয়ে চলেছেন কিছু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান।
ব্যক্তি যখন ফাউন্ডার হয় তখন বুঝতে হবে কোথাও একটা গ্যাপ । এই গ্যাপটাকে পূর্ণতা দিতে যাচ্ছেন সেই মহান হৃদয়ের ব্যক্তি। নির্ভীক স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ডোনেশন ক্লাবের উপদেষ্টা ও প্রেস ক্লাব সভাপতি, দৈনিক স্টার লাইন পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা জসীম মাহমুদের আন্তরিকতায় এই সমাজে ছড়িয়ে থাকা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে যাওয়া নারীদের ও তাদের নিভৃতে কাজকে বেগবান সন্মুন্নত রাখতে; সমাজের আলোয় আলোকিত করতে ফেনীর চারজন নারী কে সংবর্ধনা দিলেন। নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী নিয়মিত তাদের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সমাজের স্বার্থে কাজ করা মানুষের সন্মান দিচ্ছে। চারজন নারী যে কারণে সংবর্ধিত হলেন
১.সাহিদা সাম্য লীনা –
ফেনীতে ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে পুরুষের পাশাপাশি সাংবাদিকতা করে যাচ্ছেন দীর্ঘ সময়। অন্যের পত্রিকায় কাজ করতে করতে স্বপ্ন দেখেন নিজের একটি আইডেন্টি। কাজ করতে অনুভব করেন মেয়েদের প্রতিবন্ধকতা। মেয়েদের জন্য শেখার , কাজের ও এই পেশায় আসা জটিল। পুরুষদের মতো এমন একটি হাউজ হোক যেখানে আগ্রহী মেয়েরা এসে অন্তত একটা অবস্থান গড়ার প্রাথমিক ঘর হোক। এমন একটি পিচ্ছিল সময়ে নিজ চেষ্টায় ,বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নিজ যোগ্যতায় ফেনীর আঁচল নামক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হন। কঠিন পথ কঠিন কাজ নারী হয়ে। তাও মফস্বলে ! বাবার পত্রিকা না, স্বামীর পত্রিকা না। তৃণমূল থেকে বেড়ে উঠে; নিজের অর্জন । ফেনীতে নারী সাংবাদিক থেকে কাজ করে সম্পাদক হওয়া তিনিই প্রথম। নিজের তীব্র ইচ্ছার প্রতিফলন। নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তার এই অর্জন কে মূল্যায়িত করে তাকে সন্মাণ জানায়।

২. ফরিদা আক্তার মায়া – কবি ফরিদা আক্তার মায়া। শিক্ষকতার মহান পেশায় থেকেও সমাজের অন্ধকার দিকগুলো, অন্যায়,অত্যাচার ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তিনি নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সংসার, চার কন্যার দেখাশোনা, একজন ভালো মা হয়ে সন্তানদের গড়ে তুলছেন। প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া সমস্যা গুলোকে ছন্দের লেখনিতে ফুটিয়ে তুলে জনপদের চোখে, সমাজের দায়িত্ববানদের সজাগ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন অনুরাগী ,বিদুষী নারী , মমতাময়ী হয়ে নারীদের কাজকে উৎসাহিত করতে সর্বদা নিবেদিত। নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তার এই প্রাণোদীপ্ত চাওয়াকে সন্মাণ জানান।
৩.ইশরাত চৌধুরী দোলা
ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রী বিষয়ক সভানেত্রী ইশরাত চৌধুরী দোলা। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে নিয়োজিত করেছেন ছাত্র রাজনীতির সাথে। তিনি কলেজ ছাত্রীদের অধিকার আদায়ে বরাবরই ছিলেন সোচ্চার। অদম্য এই ছাত্রী ফেনী সরকারি কলেজের ১০০ বছরের ইতিহাসে ছাত্রীদের জন্য প্রথম নামাজ আদায় করার স্থান বা এবাদত খানার ব্যবস্থা করেন।তার এই প্রশংসনীয় কাজকে মুল্যায়ন করে নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ডোনেশন ক্লাব তাকে সংবর্ধিত করে।

৪. শাহানা আক্তার- ঘর কন্যা করে মেয়েরা অবসর সময়ে পান খাবে, পুরুষের টিপ্পনী শুনবে সেই দিন এখন ব্যাকডেটেড। যুগের সাথে মিলিয়ে মেয়েরা এখন সর্বত্র তাল- লয় মিলিয়ে নিয়েছে। ভাত রেঁধে,চুল বেঁধে নারীদের পদচারণায় এখন দেশ মুখরিত। জেলা শহরে নারীরাও কিছু না কিছু অবদান রাখছে। সেটি উদ্যোক্তা হোক,ব্যবসায়ী হোক। উদ্যোক্তা রা এখন সমাজকে নানান ভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। কেউ অর্থ দিয়ে, না হয় কেউ অর্থ বিনিয়োগ করে। শাহানা আক্তার ফেনীর হাসপাতালের একজন পরিচালক । সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কে আলোকিত করার চেষ্টায় তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ‌ নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই উদারতার সাক্ষী এই নারীকে সন্মান জানায়।

৫. রাবেয়া বেগম – বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর অতিক্রান্ত। অগণিত মুক্তিযোদ্ধা বহু বছর ছিলেন অবহেলিত। সরকার ইদানিং কাল গুলো তে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত তালিকা তৈরি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এর ফাঁকেও বাদ পড়েন অনেকেই। মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক মূল্যায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্যও নিয়েছেন দায়িত্ব। আমরা কোটার কথা জানি। কোটা এখন চাকরি কিংবা শিক্ষায় আবদ্ধ নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের এখন পদ পদবী দিয়েও মর্যাদা দিচ্ছেন। রাবেয়া বেগম একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে গর্বিত । মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বুকে নিয়ে পিতার স্মৃতি আঁকড়ে ধরতে নিয়োজিত হয়েছেন ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের কার্যনির্বাহী সদস্য, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংসদের সাথে ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটি,ঢাকা। এইসব সংগঠন তাকে উদ্বুদ্ধ করে দেশপ্রেমের মহত্ত্বে। নির্ভিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই নারীর চেতনা কে সন্মাণ করেন।

Loading