রক্তাক্ত আগস্ট নয়,বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ৮:২২ অপরাহ্ণ , আগস্ট ৩, ২০২১

রাশেদুল আজীজঃ

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রসৃষ্টি ও বেড়ে ওঠা, সংগ্রাম, অধিকার রক্ষা, মানুষের মুখে হাসি ফোটানো সবই যাঁর জীবন উৎসর্গে হয়েছে,তিনি বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু।বাংলাদেশের ধূলোমাটিতে গড়াগড়ি করে বড় হওয়া দেশের একান্ত আপনজন শহীদ শেখ মুজিবুর রহমান। ১৫ আগষ্ট একটি কালো দিবস। বাংলার ভাগ্যাকাশে এক শোকাবহ ক্ষণ।যে শোক মানুষ কখনও সইতে পারবেনা।এরপরও মানুষের উপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে গেলো। পৃথিবীজোড়া কিংবদন্তিপ্রতিম নেতার এই শহীদ হওয়া,দুনিয়া জুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গন কেঁপে উঠেছিলো।বিশ্বাস আর বিশ্বাসঘাতকতার এক বিস্তর ফাড়াক মানবসমাজকে নতুন রুপে দাড়ঁ করিয়েছে। জেল জুলুম, নির্যাতন এবং সারাজীবন ধরে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজেপুড়ে সাধারণ মানুষের ঘাম ও শ্রমের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করেছেন।মানুষের সুখে দুঃখে জীবন বিলিয়ে দিতে তার জুড়ি নেই।মানুষ এবং মানুষ, অধিকার আর সংগ্রাম এতে তার জীবন ও স্বপ্ন ছিলো।নিজ বলতে তাঁর কিছুই ছিলো না।এমনকি পরিবারবর্গের প্রতি তাঁর সময় দেয়া ছিলো দুরুহ। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই পরিবারবর্গকে সাথে নিয়ে শহীদ হলেন বাংলার দিকপাল,গণমানুষের সিপাহসালার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের মহানায়ক,সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা মানুষ এবং মানুষের অধিকার আদায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, আপোষহীন বজ্রকন্ঠ,বাঙালীর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ অভিন্ন ও অবিচ্ছেদ্য ইতিহাস। স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দানকারী কালজয়ী এই মহান নেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর। বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পযার্য়ে তাঁর গতিশীল ও সুযোগ্য নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভূ্্যদয় ঘটেছিল। জাতীয় পরিচয় নির্মাণে এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি গঠনে তাঁর কালজয়ী নেতৃত্ব গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ।বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের মনকে জয় করেছেন,জয় করেছেন নির্যাতিত নিপীড়িত এবং শোষিত বিশ্ববাসীর হৃদয়ও।বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালীর প্রাণের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধু আজীবন বাঙালীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করেছেন।বাংলাদেশের গণমানুষের জন্য তিনি জেল জুলুম, অত্যাচার,নির্যাতন সহ্য করেছেন। বাঙ্গালীকে ঐক্যই শক্তি এই মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন। পাকিস্তান সরকার ষাটের দশক থেকে বাঙ্গালীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাদের জন্য প্রধান বাধা বিবেচনা করে।ছয় দফা ঘোষনার পর বার বার গ্রেফতার নির্যাতনের পাশাপাশি ১৯৬৮ সালে আগরতলা মামলা দিয়ে তাকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিলো। বাংগালী জাতির পিতা বঙ্গবনধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ আমাদের অস্তিত্বের অংশ। আমাদের প্রয়োজনেই বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।তাঁর চিন্তা চেতনা,আদর্শ বাস্তবায়ন ও ধারণ করার মাধ্যমে তাঁকে সম্মান জানাতে হবে। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন ভূখন্ড দিয়েছেন এবং বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন।ক্ষণজন্মা এই মানুষটির মহাজীবন শতবর্ষেও অবিনশ্বর, অম্লান। আমাদের নেতা। আমাদের আদর্শ।আমাদের চেতনা। শতবর্ষে বাংগালী জাতির অনুপ্রেরণা। তিনি বাংলার মানুষের হৃদয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী মৃত্যুহীন,চির ভাস্বর। তিনিই আমাদের মুক্তির মহানায়ক। ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫। বিশ্ব ইতিহাস ও বাঙ্গালী জাতির জন্য অমোচনীয় এক কলংকের দিন। রাতের অন্ধকারে জঘন্য এ নৃশংসতা স্বাধীনচেতা বাঙালি জাতির বীরত্বের অহমিকাকে বিশ্ব দরবারে ভূলুণ্ঠিত করেছে আরেকবার— এ হত্যা কেবল একজন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা নয়, এ হত্যাকান্ড স্বাধীনতা যুদ্ধে পাওয়া রক্তস্নাত লালসবুজের মানচিত্রকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। ১৫ আগষ্টে শপথ হোক,আমরা জেগে রইবো, তোমার আদর্শ বুকে নিয়ে।

Loading